ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা উঠছে আজ

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা উঠছে আজ। সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাসব্যাপি এ মেলার উদ্বোধন করবেন। এবার অবরোধ ও হরতালের মধ্যেও ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাণিজ্য মেলা চলবে। গতকাল মেলা মিডিয়া সেন্টারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য তুলে ধরেন বাণিজ্যসচিব মাহবুব আহমেদ। এবারের মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৩০ ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে এবং প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মাহবুব আহমেদ বলেন, হরতাল-অবরোধের মধ্যেও মেলার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন আর কোনো সমস্যা হবে না। এবার রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যেও যথাযথভাবে মেলা চলবে এবং দর্শনার্থীদের সমাগম হবে। মেলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বাণিজ্য সচিব জানান, এবার বিভিন্ন ক্যাটিগরির বরাদ্দের জন্য ৪৭১টি স্থাপনা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্যাভিলিয়ন ৯৬টি, মিনি প্যাভিলিয়ন ৪৯টি, স্টল ৩১৬টি, রেস্তোরা ১০টি এবং মা ও শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র তিনটি। আন্তর্জাতিক মেলায় তিনটি মহাদেশ এশিয়া, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের ১২টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, হংকং, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, তুরস্ক ও সিঙ্গাপুর রয়েছে। এতে বিদেশি ২৮টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের জন্য এবারও আলাদা জোন করা হয়েছে। এদিকে গত মাসের শেষ সপ্তায় বাণিজ্য মেলায় পাকিস্তানি স্টল বরাদ্দ বাতিলের দাবি জানিয়ে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসুর কাছে স্মারকলিপি দেন গণজাগরণ মঞ্চের নেতারা। তবে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, পাকিস্তানি স্টলের নির্মাণকাজ চলছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এবার মোট সাতটি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানি স্টলের বিষয়ে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু বলেন, দেশটির সাথে কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নেই। তবে তাদের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের মতো পাকিস্তানও বাণিজ্য মেলায় অংশ গ্রহণ করছে। তাছাড়া আগে থেকেই তাদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সর্বোপরি স্মারকলিপিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানান তিনি। অন্য বছরের চেয়ে এবার বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব। তিনি বলেন, সরকারি আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি বিজিবি ও বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত থাকবে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে ১২০টি সিসিটিভিসহ আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আলাদা বুথ এবং মেলায় ভেজাল বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাহবুব আহমেদ বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার মেলা অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। সুন্দরবন ইকোপার্ক, জরুরি চিকিৎসার জন্য মেডিকেল সেন্টার, অভ্যন্তরীণ মাইকিংয়ের পরিবর্তে অডিও ভিজ্যুয়াল সিস্টেম, ই-পার্ক, ডিআইটিএফ ক্ষণ গণনা , সাকুরা গার্ডেন ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি প্যাভিলিয়ন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ২৫ কোটি টাকা, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। এবার আরও বেশি হবে বলে প্রত্যাশা করেন বাণিজ্য সচিব। তিনি বলেন, প্রতিদিন মেলায় এক লাখের বেশি দর্শনার্থী আসবেন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত বাণিজ্যসচিব মর্তুজা আহমেদ, ড. রুহুল আমিন সরকার, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান সুভাশীষ বসু, মহাপরিচালক ড. রাখাল চন্দ্র বর্মন, মো. সালাউদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।