টিআর-কাবিখার অর্ধেক যায় এমপিদের পকেটে

 

স্টাফ রিপোর্টার: তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দরিদ্রদের জন্য কর্মসূচি টিআর ও কাবিখা বরাদ্দের ৮০ শতাংশই চুরি হয়। ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হলে ১৫০ কোটি টাকা (অর্ধেক) যায় এমপিদের পকেটে। বাকি ১৫০ কোটি টাকার সিংহভাগ যায় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পকেটে। আমরা চোখ বন্ধ করে এ দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছি। রাজধানীর শেরেবাংলানগরে পিকেএসএফ ভবনে রোববার গ্লোবাল সিটিজেনস ফোরাম অন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সামিট ২০১৬ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, সব এমপিই হয়তো চুরি করেন না। কিন্তু বেশিরভাগ এমপিই এ কাজটি করেন। এ জন্য উন্নয়ন বাজেটের অর্থ সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের বাজেটে দেয়া উচিত। এতে উন্নয়ন বৈষম্য কমে আসবে। সরকার টেকসই উন্নয়ন, গণতন্ত্রের বিকাশ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সুশাসন ও শান্তি না থাকলে প্রবৃদ্ধি করা কঠিন। পরিবেশের সঙ্গে সমন্বয় করে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, এই মুহূর্তে দেশের জন্য দুটি চ্যালেঞ্জ- টেকসই ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র। জনগণের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র না থাকলে উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব না। দারিদ্র্য হয়তো দূর হবে কিন্তু বৈষম্য থেকেই যাবে। ইন্টারনেটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাতিলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে হাসানুল হক ইনু বলেন, আমি সাত বছর ধরেই বলে আসছি, ইন্টারনেটের ওপর থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাতিল করতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ইন্টারনেট সুবিধা বৃদ্ধি করা জরুরি। তা না হলে আমাদের ছেলেমেয়েরা উন্নয়নের মহাসড়ক থেকে পিছিয়ে পড়বে।

মন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন করতে হলে জঙ্গিবাদ দূর করতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রবৃদ্ধিসহ সামাজিক বৈষম্য দূর করে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে হবে। গরিব উৎপাদনের কাঠামোর সংস্কার করতে হবে। যে কাঠামো গরিব উৎপাদন করে তার কোনো প্রয়োজন নেই। সবার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে ১৬ কোটি মানুষকেই টেকসই উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে হবে। বাংলাদেশ সামিট ২০১৬-এর আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, বাংলাদেশে এখন ৩ কোটি দরিদ্র মানুষ আছেন, এর মধ্যে অতিদরিদ্র প্রায় ২ কোটি। প্রত্যেক গ্রামগঞ্জে তথ্য নিয়ে দারিদ্র্য দূর করতে হবে। মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন শিক্ষা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সুবিধা। তিনি বলেন, আমরা যাই করি না কেন, জলবায়ু পরিবর্তনে নজর দিতে হবে। তা না হলে আমরা কোনো এক এলাকায় দারিদ্র্য নিরসন করলাম, এরপর প্রাকৃতিক দুর্যোগে হয়তো সব কিছু লণ্ডভণ্ড করে দিলো। তাই দারিদ্র্য নিরসনের পাশাপাশি জলবায়ুর হুমকি মোকাবেলাও জরুরি। টেকসই উন্নয়নে জঙ্গিবাদ দমন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সাইবারেও জঙ্গিবাদ হচ্ছে। এটাতেও বড় ধরনের ক্রাইম চলছে। যেমন দেখলাম, সাইবার ক্রাইম করে ব্যাংকে বড় ধরনের লুট হলো। টেকসই উন্নয়নে জঙ্গিবাদ ও সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করা জরুরি।