ঝিনাইদহ জেলা যুবদল আহ্বায়ক রওশন বিন কদর মিরনসহ আসামি ৯ হাজার

চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের অধিকাংশ স্থানেই হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল

 

হরতালের দ্বিতীয় দিনে মেহেরপুরে কমপক্ষে ৩০টি ককটেল বিস্ফোরণ : জীবননগরে ট্রাক ভাঙচুর

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ভাঙচুর, দর্শনায় জামায়াতের ব্যাপক পিকেটিং, মেহেরপুরে কমপক্ষে ৩০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ছাড়া তেমন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশি একশন, ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ ও ধরপাকড়ের মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে তিন দিনের হরতালের দ্বিতীয় দিন।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিন। হরতাল সমর্থকদের সাথে দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশের ত্রিমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে। বিরোধীদল দাবি করেছে, পুলিশের হামলার সময় গাড়ি চাপায় তাদের এক কর্মী মারা গেছেন। হরতালকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ২১০০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। হরতালের প্রথম দিন রাজধানীর নানা জায়গায় ঘটেছে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। রাজধানীর মতিঝিলে চিনিশিল্প ভবন, বিমান অফিস ও নর্থসাউথ রোডে বড় ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মতিঝিল ব্যাংকপাড়া ও পুরান ঢাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল বের করে হরতাল সমর্থনকারীরা। হরতালের বিপক্ষে পাল্টা মিছিল বের করে সরকারদলীয় সংগঠন ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর নর্থসাউথ রোড, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে হরতালকারীদের সাথে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ঘটেছে। এছাড়া হরতালে সাভারে সাবেক এমপি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুর রহমান বাবুল, শ্যামপুরে সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমেদ, ঝিনাইদহ জেলা যুবদল আহ্বায়ক রওশন বিন কদর মিরন, যুগ্মআহ্বায়ক আহসান হাবিব রণক, চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটন, গফরগাঁও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজিমুদ্দিন আজিমসহ সারাদেশে ৯ হাজার জন বিরোধী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েলসহ ৬০০ জনকে গ্রেফতার  এবং ১৩ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত নানা মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে বলেও দাবি করেছে বিএনপি।

এদিকে প্রথম দিনের হরতালে রাজধানীর বেশির ভাগ যানবাহন চলাচল করেনি। বন্ধ ছিলো বেশির ভাগ বিপণি-বিতান ও শপিং মল। রাজধানী থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। রেল ও লঞ্চ চলাচল ছিলো স্বাভাবিক।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৮ দলের ডাকা ৬০ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি পিকেটিং মিছিল বের করে। জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে শেষ হয়। উপস্থিত ছিলেন এম. জেনারেল ইসলাম, ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, অ্যাড. শামিম রেজা ডালিম, আবু জাফর মণ্টু, শহিদুল ইসলাম রতন, মজিবুল হক মজু, রবিউল ইসলাম লিটন, আশরাফ বিশ্বাস লিল্টু, মোখলেছুর রহমান মোকলেছ, আতিয়ার রহমান লিটন, মুকুল জোয়ার্দ্দার, ফারুক আহমেদ, আরিফুজ্জামান পিণ্টু, শরিফুজ্জামান সিজার, এম এ তালহা, রাজিব খান, সুজন মালিক প্রমুখ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি একাংশ গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের নেতৃত্বে কেদারগঞ্জস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে হরতালের পক্ষে পিকেটিং মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ হাসান চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আয়োজন করে। উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রউফুন নাহার রীনা, সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী আব্দুল খালেক, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা ছাত্রদলের যুগ্মআহ্বায়ক শাজাহান খান, জেলা তরুণদলের আহ্বায়ক মাবুদ সরকার প্রমুখ।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা লে. কর্নেল সৈয়দ কামরুজ্জামানের সমর্থনে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পুলিশি বাধার মুখে রূপছায়া সিনেমাহল সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্বে ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আব্দুল ওহাব মল্লিক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মহাসিন আলী বিশ্বাস, সৈয়দ শরিফুল আলম বিলাস, মনিরুজ্জামান লিপ্টন প্রমুখ।

হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বকুলের নেতৃত্বে গতকাল বেলা ১১টায় পিকেটিং বিক্ষোভ মিছিল বের হলে কোর্টমোড়ে পুলিশের বাধা মুখে পড়ে। পুলিশি বাধা মাড়িয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে শেষ হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সাবেক দপ্তর সম্পাদক আইনুর হক পচা, সহসভাপতি আরশেদ আলী কালু, জেলা কৃষকদলের সভাপতি হামিদুল হক নেতাজী, পৌর বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ প্রমুখ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের অহেতুক হরতালের প্রতিবাদে হরতালবিরোধী মোটরসাইকেল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। কেদারগঞ্জ নতুনবাজার থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফ হোসেন দুদুর নেতৃত্বে হরতালবিরোধী মোটরসাইকেল মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ হাসান চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফ হোসেন দুদুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলী আহম্মেদ, যুগ্মসম্পাদক হাবিবুর রহমান লাবলু, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাড. শফি,সোহরাব আহম্মেদ, ইছাহক আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবাইদুর রহমান জিপু চৌধুরী, অ্যাড. ফিরোজ আহম্মেদ, সদর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লাল্টু, কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিপব, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান কালু, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শরিফ উদ্দিন, মেহেদী, যুগ্মসম্পাদক ফরিদ হোসেন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মতি, সাবেক জেলা ছাত্রলীগের নেতা বুলবুল, ভুলন, শিমু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ফরিদ আহম্মেদ, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি জাবিদ, সাধারণ সম্পাদক সজল, সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক সুমনু রেজা, কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জানিফ প্রমুখ।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছেন, তিনদিনের হরতালের গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দিনে জীবননগরে বিএনপির ৩টি গ্রুপসহ জামায়াত-শিবির বিক্ষোভ মিছিল করে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান, একাংশের সভাপতি পৌর মেয়র নোয়াব আলী, পৌর বিএনপি সভাপতি সাহজাহান কবীর, উপজেলা জামায়াতের আমির খলিলুর রহমানের নেতৃতে ১৮ দলীয় জোটের বিক্ষোভ মিছিলটি বাসস্ট্যান্ড এলাকা অতিক্রমকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু ইটপাটকেল লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় আহত কিংবা অপ্রতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে বিক্ষোভ মিছিলটি বাজারের ভেতরে পৌঁছুলে পিকেটাররা রড বোঝাই একটি ট্রাক ভাঙচুর করে।

বিএনপির বিভিন্ন গ্রুপ ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী খণ্ডখণ্ড মিছিলসহকারে জীবননগর-কালীগঞ্জ সড়কের হাইস্কুল মসজিদের সামনে একত্রিত হতে থাকে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ১৮ দলীয় জোটের অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলটি পোস্টঅফিসের সামনে পৌঁছুলে বিএনপি নেতা পৌর মেয়র নোয়াব আলীর নেতৃত্বে আসা বিক্ষোভ মিছিলটি তাদের সাথে যোগ দেয়। মিছিলটি এ সময় বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত পুলিশ-বিজিবির নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে বাজারের ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় বিক্ষোভ মিছিলের ভেতর থেকে পিকেটাররা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে কেও আহত হয়নি। বিক্ষোভ মিছিল শেষে হাইস্কুল মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান, উপজেলা বিএনপি একাংশর সভাপতি পৌর মেয়র নোয়াব আলী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি সাইদুর রহমান ধুন্দু, পৌর বিএনপি সভাপতি সাহজাহান কবীর, উপজেলা জামায়াতের আমির খলিলুর রহমান, নায়েবে আমির মাও. মহিউদ্দিন প্রমুখ।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আ.লীগ। গতকাল সন্ধ্যায় দর্শনা পৌর আ.লীগের কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। দর্শনা পৌর আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা হাজি জয়নাল আবেদীন, মোমিনুল ইসলাম, মোজাহারুল ইসলাম প্রমুখ।

দর্শনা অফিস আরও জানিয়েছে, দর্শনার কয়েকটি পয়েন্টে পিকেটিং করেছে যুবদল ও ছাত্রদল। ছাত্রদল নেতা জাহান আলী সাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে হরতাল চলাকালীন সময় দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে রশিক শাহর মাজারের সামনের প্রধান সড়কে পিকেটিং করেছে যুবদল, ছাত্রদল ও তরুণদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দর্শনা পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাহারুল ইসলাম, সাঈদ, আশরাফুল, সানোয়ার, শহিদুল, অপু প্রমুখ।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে জেলার ৪টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে ও ৩৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৮ দলের ডাকা ২য় দিনের হরতাল সফল করতে মেহেরপুরের বিভিন্ন সড়কের ৪টি স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। হরতালের শুরুতেই সকাল ৬টার দিকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের রাজনগর, মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের গৌরীনগর, শহরের বন্দর ও কায়েমকাটার মোড় এলাকার সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। একই সময় শহরের কায়েমকাটার মোড়ে প্রায় ৩০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের এসআই কামাল ওগুলো ককটেল নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ওগুলো পটকা জাতীয় জিনিস। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ওগুলো জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা রাস্তার ওপর ছুড়ে মারে। এছাড়াও মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে রাজনগর নামক স্থানে মহিলা জামায়াতের কর্মীরা হরতালের সমর্থনে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মেহেরপুর জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির আলহাজ সিদ্দিকুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি তারিক মহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে ওই সব অবরোধের নেতৃত্ব দেন।

হরতালের কারণে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার কোনো পরিবহন মেহেরপুর থেকে ছেড়ে যায়নি। তবে রিকসা-ভানসহ ছোট-খাট ইঞ্জিনচালিত যান চলাচল করেছে। শহরে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিলো। অফিস আদালত খুললেও লোকজনের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিলো। স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিলো। ব্যাংক-বীমায় লেন-দেন হয়েছে সাবধানে। যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে শহর ও জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

মেহেরপুর অফিস আরও জানিয়েছে, বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্য, দেশ ধ্বংশের চক্রান্তকারীদের অবৈধ হরতালের প্রতিবাদে মেহেরপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শহর আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে বড়বাজার ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে একটি হরতালবিরোধী মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হোটেলবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি অ্যাড. আব্দুস সালাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল আলম সাজ্জাদ, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক আসলাম খান পিন্টু, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান হিরন, মাহফিজুর রহমান মাহবুব, সদর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, সদর থানা কৃষকলীগের সভাপতি জাফর ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলন, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, ৫ নং ওযার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আল আমীনসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলে অংশ নেন।

এদিকে হরতালের সমর্থনে দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুর জেলা বিএনপি শহরে মিছিল বের করে। জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক আনছার-উল হকের নেতৃত্বে মিছিলটি শহরের শাহাজীপাড়াস্থ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক কালু, জেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক প্রভাষক ফয়েজ মোহাম্মদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. মোস্তাকিম, সহসভাপতি মীর আলমগীর ইকবাল আলম, সদর থানা যুবদলের সভাপতি হাসিবুজ্জামান স্বপন, জেলা তারেক পরিষদের আহ্বায়ক রাশিকুল ইসলাম রাশু, তৃণমূল দলের সভাপতি ওমর ফারুক লিটন, বিএনপি নেতা আব্দুল হান্নান, মোস্তাক রাজা, তৌফিক প্রমুখ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।

মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কে মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের গৌরিনগর খালপাড় নামক স্থানে হরতালের দ্বিতীয় দিনে সকাল ৬টায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা। ঘণ্টাব্যাপি বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্বে দেন জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির আলহাজ মো. সিদ্দিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি জার্জিস হুসাইন, মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মশিউর রহমান, সেক্রেটারি খান জাহান আলী, জামায়াত নেতা তৌফিক মোল্লা, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোখলেছুর রহমান, সেক্রেটারি আব্দুল হালিম প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, হরতালের দ্বিতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে আলমডাঙ্গা শহরে পিকেটিং ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে আলমডাঙ্গার প্রধান প্রধান সড়কে পিকেটিং করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পৌর বিএনপির সহসভাপতি রেজাউল হক। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর জব্বার, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাসানুজ্জামান হাসান চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমদাদুল হক ডাবু, উপজেলা বিএনপি সহসভাপতি আজিবার রহমান, উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম, হাফিজুর রহমান চমক, উপজেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক মাগরিবুর রহমান, ওহিদুল ইসলাম বাবু, গোলাম হোসেন, শওকত খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের বাকী বিল্লহ, ইউনুস, পৌর যুবদল নেতা মুকুল প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা ব্যরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগ হরতালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তাফসির আহমেদ লাল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মিজানুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল রানা,  সাংগঠনিক সম্পাদক পিন্টু, সদস্য টুকুল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালমুন আহমেদ ডন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নয়ন সরকার, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তমাল, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী চন্দন, ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক পিন্টু, রনি, মুকুট, মুন্না, সাহাবুদ্দিন, খয়বার, রুবেল, মিলন, সুমন, সুরুজ, অপু, শোভন, শাকিল, সেলিম, জাইদুল, শরীফ, ওয়েব, দিগন্ত, সৈকত প্রমুখ। উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে হরতালবিরোধী একটি মোটরসাইকেল মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে।

ঝিনাইদহ জানিয়েছে, ঝিনাইদহে বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এতে সড়কগুলোতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজারে টায়ার জ্বালিয়ে ঝিনাইদহ-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে হরতাল সমর্থকরা। এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে হরতালের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। সেখানে এক সমাবেশে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন, মাহফুলুর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল বারেক, রুহুল আমিন বক্তব্য রাখেন। এদিকে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের শেখপাড়া বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় সমাবেশে শৈলকুপার সাবেক এমপি এমএ ওহাব, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান খান দিপু, নুর আমিন, আবু জাহিদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন আছে।

ঝিনাইদহ অফিস আরও জানিয়েছে, ঝিনাইদহে হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার দুপরে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে মিছিলটি বের হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নেয়। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে গিয়ে সমাবেশ করে নেতাকর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে যুগ্মসম্পাদক আব্দুল খালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাচ আলী, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সরোয়ার সউদ, অশোক ধর, আসাদুজ্জামান, একরামুল হক লিকু, রবিউল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা খাইরুল ইসলাম, বিশ্বজিত সাহা মিথুনসহ নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।

বদরগঞ্জ ব্যুরো জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত স্বঃস্ফূর্তভাবে হরতালের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত র‌্যাব, বিজিবিও পুলিশের পাশাপাশি ডিবি কর্মকর্তাদের নজরদারি ছিলো। অন্যদিকে সকাল ৯টার দিকে ভুলটিয়া বাজারের সড়কপথ অবরোধ করে ১৮ দলের নেতারা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভুলটিয়া বাজারে গেলে রাস্তা অবরোধকারী বিএনপির নেতারা চলে যায় বলে খবর পাওয়া গেছে।

বদরগঞ্জ ব্যুরো আরও জানিয়েছেন, কুতুবপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জামায়াত নেতারা গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হরতাল সমর্থনে বদরগঞ্জবাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বদরগঞ্জ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঝিনাইদহের সীমান্ত পর্যন্ত বোড়াই ও আলিয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রদর্শন করে মসজিদ মার্কেট সামনে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদর থানা জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম, সদর থানা জামায়াতের আমির আ.রউফ, তিতুদহ ইউনিয়নের জামায়াতের আমির মাও. রেজাউল করীম, পদ্মবিলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাও. সানোয়ার হোসেন প্রমুখ।

ভালাইপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল বিকেল ৫টার দিকে আলমডাঙ্গার গাংনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আসমানখালী আওয়ামী লীগের পাটি অফিসে বিএনপির ডাকা হরতালের প্রতিবাদে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। গাংনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা যুবলীগ নেতা চিৎলা ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা যুবলীগের যুগ্মআহ্বায়ক আসাদুজ্জামান কবীর, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মহাসিন রেজা, জেলা যুবলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা লালা, হযরত আলী, তহিদুল ইসলাম ফকা, খাদিমপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হালিম মণ্ডল প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুল হক।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরতালের দ্বিতীয় দিনেও হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল মঙ্গলবার সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের উদ্যোগে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। গতরাত ৯টার দিকে লাঠি মিছিল করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুল, পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মেদ আলী, উপজেলা যুবলীগের যুগ্মসম্পাদক মজিরুল ইসলাম ও ধানখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদাক আক্তারুজ্জামান বাবুসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।