ঝিনাইদহের গ্রামে বাড়ি বানাচ্ছিলেন জঙ্গি আব্দুল্লাহ!

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের অভিযুক্ত জঙ্গি নসিমনচালক আব্দুল্লাহ নতুন একটি পাকা বাড়ি তৈরি করছিলেন কংশী গ্রামে। এ বাড়ি তৈরিতে নব্য জেএমবি অর্থের জোগান দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পোড়াহাটি গ্রামে আব্দুল্লাহ’র বাড়িতে গড়ে ওঠা জঙ্গি আস্তানায় ২১ এপ্রিল পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অভিযান শুরু হলে বাড়ি নির্মাণ কাজে নিয়োজিত রাজমিস্ত্রি ও সহকারীরা পালিয়ে যায়। বর্তমানে বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। নসিমন চালক আব্দুল্লাহ কোথা থেকে এ টাকা পেলেন তা নিয়ে গ্রামবাসীর মনে প্রশ্ন জাগে। তখন তারা জানতেন না আব্দুল্লাহ একজন জঙ্গি।

নির্মাণাধীন বাড়িটির পাশের বাড়ির বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, আব্দুল্লাহ মাস দুই আগে কংশী গ্রামের লাল্টু কাজী ও তার ভাই কাজী ফারুক হোসেনের কাছ থেকে এক লাখ টাকায় ১০ শতক জমি কেনেন। মাসখানেক আগে ৪ বেড রুম, বাথরুম ও রান্না ঘরসহ ভবন তৈরির কাজ শুরু করেন। গ্রামবাসীরা জানায়, অপরিচিত দুজন রাজমিস্ত্রি কাজ শুরু করে। তারা টিনের ছাপড়ায় থাকতো। আশপাশের লোকজনের সাথে কথাবার্তা বলতো না। আব্দুল্লাহ প্রতিদিন মোটরসাইকেলে করে কাজ তদারকি করতে আসতেন। বাড়ি থেকে মিস্ত্রিদের জন্য খাবার নিয়ে আসতেন। তার জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযান শুরুর আগের দিন (২০ এপ্রিল) রাতেও তাকে নির্মাণাধীন বাড়ির কাছে দেখা যায়। এরপর তাকে আর কংশী গ্রামে দেখা যায়নি।

জমির মালিক কাজী লাল্টু জানান, ৩ মাস আগে তিনি ও তার ভাই কাজী ফারুক হোসেন আব্দুল্লাহ’র কাছে ১০ শতক জমি এক লাখ টাকায় বিক্রি করেন। ভাইয়ের সাথে সাথে পোড়াহাটির সড়কের পাশে আব্দুল্লাহ একটি পেট্রোল পাম্পে কাজ করতেন। পোড়াহাটি গ্রামের চৈতন্য বিশ্বাসের ছেলে প্রভাত বিশ্বাস ৯ বছর আগে ধমান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। নাম রাখেন আব্দুল্লাহ। পরে তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল লতিফের মেয়ে রুবিনাকে বিয়ে করেন। কাউন্টার টেরোরিজমের যুগ্ম কমিশনার আমিনুল ইসলাম জানান, সাড়ে ৩ বছর আগে আব্দুল্লাহ নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। উত্তরবঙ্গ থেকে বোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও সরঞ্জাম তার বাড়িতে এনে মজুত করা হয়। তার বাড়ি বানানোর টাকাও জেএমবি দিয়েছে বলে তিনি জানান। পুলিশ ধারণা করছে কংশী গ্রামের বাড়ি তৈরি হলে সেখানে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলা হতো। জেলা সদর থেকে কংশীর দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। একেবারে নির্জন গ্রাম। এক সময় কংশী গ্রাম চরমপন্থিদের আস্তানা ছিলো। ১৯৮৭ সালে দু দল চরমপন্থির মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন খুন হয়েছিলো।