জীবননগর পুরাতন চাকলায় শ্বশুর পক্ষের হামলায় আহত জামাই ইয়াসিন আবশেষে মারা গেছে : গ্রেফতার এক

জীবননগর ব্যুরো: ৫০ হাজার টাকা হারানোকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-বিবাদের জের ধরে শ্বশুরবাড়ি পক্ষের লোকজনের হামলায় মারাত্মক আহত জামাই ইয়াসিন আলী (২৪) অবশেষে মারা গেছেন। ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। গত বুধবার শ্বশুর আয়ুব আলী বিচারের নামে লোকজন নিয়ে জামাই ইয়াসিন আলীর পুরাতন চাকলার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকেসহ তার অপর দু ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই ১২ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারভুক্ত আসামি আশাদুল ইসলামকে (১৮) পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার পুরাতন চাকলার মৃত হযরত আলীর ছেলে ইয়াসিন আলীর সাথে পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার ইদ্রাপুর গ্রামের আয়ুব আলীর মেয়ে শাকিলা খাতুনের সম্প্রতি বিয়ে হয়। ইয়াসিনের বাড়ি হতে গত কয়েকদিন আগে ৫০ হাজার টাকা খোয়া যায়। এছাড়াও সাংসারিক বিষয়াদি নিয়ে স্ত্রীর সাথে তার বিবাদ চলছিলো। ঝগড়া-বিবাদের খবর পেয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আয়ুব আলী স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় লোকজন নিয়ে বিচার করতে জামাই ইয়াসিনের বাড়িতে যায়। এ সময় ইয়াসিন আলী তার ভাইদের নিয়ে কৃষিক্ষেতে কাজ করছিলো। ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মোবাইলফোনে ইয়াসিন আলীসহ তার ভাইদের বাড়িতে ডেকে নেন। ইয়াসিন ভাইদের নিয়ে বাড়িতে এসে অনেক লোকজনের উপস্থিতি দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করেন। এ সময় তাদেরকে জাননো হয় স্ত্রী সাথে বিবাদ নিয়ে বিচার-সালিস হবে। এ কথা শোনার পর ইয়াসিন চেঁচামেচি শুরু করে। ইয়াসিন বলে তাকে বিষয়টি আগে না জানিয়ে বিচার করতে বাড়িতে আসা কতোটুকু যৌক্তিক। এ প্রশ্ন তোলার পর ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুর আয়ুব আলী, নানা শ্বশুর একই গ্রামের চাঁন আলী ও ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের নির্দেশে অন্যরা বাঁশের লাঠি ও হেঁসো নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করে। হামলায় ইয়াসিনসহ তার দু ভাই মারাত্মক আহত হয়। আহতের উদ্ধার করে প্রথমে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ও পরে যশোর হাসপাতালে নেয়া হয়। এখানে ইয়াসিনের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার এশিয়ান কার্ডিয়াক জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ইয়াসিনের ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে আয়ুব আলী, চাঁন মিয়া, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও শাকিলা খাতুনসহ ১২ জনকে আসামি করে জীবননগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ দিকে এ ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী শাকিলা খাতুন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। পুলিশ শুক্রবার অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি নিহত ইয়াসিনের নানা শ্বশুর একই গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে এজাহারভুক্ত আসামি আশাদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।