জীবননগর আন্দুলাড়িয়ার ভুয়া চিকিৎসক মিরাজ উদ্দিন অর্থদণ্ড দিয়ে পালিয়েছেন : জেলহাজতে কাজী কামাল

 

জীবননগর ব্যুরো/আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: ভ্রাম্যমাণ আদালত রায় প্রদানের পর দণ্ডিত কথিত চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিরাজ উদ্দিন জরিমানার ৫ হাজার টাকা প্রদান করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। অপরদিকে কথিত ভারতীয় ভুয়া ডাক্তার চিকিৎসক কাজী কামালকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত রোববার জীবননগর থানা পুলিশ আদালতের আদেশে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁও থানার গাড়াডোবা গ্রামের কাজী কামাল উদ্দিন ২০১০ সালে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেন। জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামে এসে অবস্থান শুরু করেন। এ সময় তিনি কোলকাতার বিধানচন্দ্র মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে আন্দুলবাড়িয়ায় চিকিৎসা শুরু করেন। তার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র নিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকদের মাঝে সন্দেহ দেখা দেয়। ২০১১ সালে ৪ অক্টোবর জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার চুয়াডাঙ্গার একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। দীর্ঘদিন হাজতবাসের পর সম্প্রতি ছাড়া পেয়ে কথিত ডাক্তার কাজি কামাল ঝিনাইদহ এলাকায় গিয়ে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে আন্দুলবাড়িয়ায় ফিরে এসে ফের তিনি চর্ম, যৌন, শিশু ও স্ত্রী রোগসহ জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে এলাকায় মাইকিং করেন। আন্দুলবাড়িয়া বাজারের মিস্ত্রিপাড়া মোড়ে নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসে প্রত্যেকদিন নিয়মিত সরলসোজা রোগীদের হাতে ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে দিয়ে ২শ টাকা হারে হাতিয়ে নিতেন।

অভিযোগ উঠেছে, এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে কাজী কামাল চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ভারতীয় চিকিৎসকের নাম ভাঙিয়ে এভাবে প্রতিদিন তিনি রোগীদের নিকট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছিলেন হাজার হাজার টাকা। চিকিৎসার নামে এলাকায় তার অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে অনেকে। এ অভিযোগ পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ গত শনিবার বিকেলে আন্দুলবাড়িয়া বাজারের নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে কাজী কামালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোর্পদ করে। আদালত ভুয়া চিকিৎসক কাজী কামালকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অপর কথিত নামধারী চক্ষু বিশেষজ্ঞ মিরাজ উদ্দিনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

এদিকে অনুমোদনবিহীন অবৈধ নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছে এলাকার অনেকে। অপরদিকে আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালে চক্ষু ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইন্টার্নি শিক্ষার্থী এনে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চোখের মতো স্পর্শকাতার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেয়ায় স্থানীয় জনতা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ আভিযোগ তোলে।