জীবননগরে স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে স্বামীর সংবাদিক সম্মেলন

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা কাউন্সিলর মুসলিমা খাতুনের বিরুদ্ধে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে সংসার তছনছ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জীবননগর শহরের গোপালনগরে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মুসলিমার স্বামী বখতিয়ার রহমান এ সংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে বখতিয়ার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ঝিনাইদহের মহেশপুরের ভৈরবা গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে মুসলিমা খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। ২০০৫ সালে জীবননগর পৌর নির্বাচনে মুসলিমা খাতুন সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়। পৌরসভায় যাতায়াতকালে সে পৌরসভার এক কাউন্সিলরের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানার পর এ পথ থেকে তাকে সরিয়ে আনতে নানাভাবে চেষ্টা করি। কিন্তু তাকে ফেরাতে ব্যর্থ হই। এ সময় সে ক্ষমতাসীন দলের ওই পাতি নেতা মুসলিমা পরকীয়া প্রেমিকের সাথে হাতে মিলিয়ে আমাকে নানাভাবে হুমকিধামকি দিয়ে হত্যার অপচেষ্টা করে। খাবারের সাথে জীবনঘাতী কবিরাজি ওষুধ মিশিয়ে দেয়। কিন্তু আল্লাহর আশেষ রহমতে আমি বেঁচে যাই। এর পূর্বে আমি মাঠের ৪ বিঘা জমি বিক্রি করে থানাপাড়া মসজিদের সামনে দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করি। ওই বাড়ি আত্মসাৎ করতে আমার স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিককে দিয়ে আমার নানাভাবে হুমকিধামকি দেয় এবং একপর্যায়ে আমার বাড়িটি আমার দু মেয়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে বাধ্য করে। বাড়ি রেজিস্ট্রির পর মুসলিমা আমাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে। সে একপর্যায়ে আমাকে তালাক প্রদান করে এবং হয়রানি করার উদ্দেশে আমার বিরুদ্ধে একে একে ৫টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। আমার শিশুসন্তান দুটিকে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করে। আমাকে বাড়িছাড়া ও তালাক দেয়ার পর এখন নিয়মিত সে তার পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে ওই বাড়িতে বাসরশয্যা রচনা করে চলেছে। চোখের সামনে এ দৃশ্য দেখতে দেখতে আজ আমি ক্লান্ত।

দুটি সন্তান ও দ্বিতল বাড়ি থাকলেও আজ আমি বাড়িহারা-সন্তানহারা। সুখের সংসার তছনছ হয়ে গেছে। নিজে একটি ঝুঁপড়ি ঘরে কোনো রকমভাবে দিন গুজার করছি। আর এ সবই হয়েছে সাবেক কাউন্সিলর ওই পাতি নেতার কারণে। আমি আজকে এ সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের নিকট উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জীবননগর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমাকে ইঙ্গিত করে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। ৪ বছর ধরে মুসলিমার সাথে আমার কথা হয় না। পরকীয়া প্রেমের আনিত অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। আমার বিরুদ্ধে যদি এমন অভিযোগ আনা হয় তবে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

সাংবাদিক সম্মেলনে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে মুসলিমা খাতুন বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের সাথে আমার পরকীয়া প্রেমের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তার সাথে আমার পরকীয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়াও তাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা এবং সন্তানদের দেখতে না দেয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাও মিথ্যা। আমার বড় মেয়ে অনার্সের ছাত্রী এবং ছোট মেয়ের বয়স ১১ বছর। তারা আর শিশু নেই। তাদেরকে পিতার সাথে দেখা করতে দেয়া হয় না এমন অভিযোগ হাস্যকর। দায়িত্ববান পিতা হলে অবশ্যই তারা তার সাথে দেখা করতো।