জীবননগরে কাবিখা কাবিটা টিআর ও জিআর প্রকল্পের চাল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

 

দ্বিতীয় দিনে আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্প স্থান পরিদর্শন তদন্ত টিমের

এমআর বাব/নারায়ণ ভৌমিক: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কাজের বিনিময় খাদ্য কাবিটা, টেস্ট রিলিফ টিআর ও কাজের বিনিময় খাদ্য কাবিখা কর্মসূচি প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় জেলা প্রশাসনের উদোগে গঠিত তদন্ত কমিটি বিভিন্ন প্রকল্প সরেজমিনে গণতদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার সকাল হতে কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এডিএম দেব প্রসাদ পাল,  নেজারত ডেপুটি কালেক্টর এনডিসি তরিকুল ইসলামকে সাথে নিয়ে আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করেন।

জীবননগর উপজেলায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে নি.এ.ভিত্তিক প্রথম  পর্যায় টেস্ট রিলিফ টিআরের ৪৪টি প্রকল্পে ১৩০ টন চাল, কাজের বিনিময় খাদ্য কাবিখার ৮টি প্রকল্পে ১২৪ টন চাল, ২য় পর্য়ায়ে টিআরের ৪৬টি প্রকল্পে ৪১ লাখ ৩ হাজার ৫৭৭ টাকা, নি.এ. দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজের বিনিময় টাকা কাবিটার ৮টি প্রকল্পে ৪১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, প্রথম পর্যায় কাবিটা চাল ১০৫.৪৮৪৯ মেট্রিক টন, দ্বিতীয় পর্য়ায (সা.) কাবিটার ১৫ লাখ ৪০ হাজার ১৫৩ টাকা, প্রথম পর্যায় টেস্ট রিলিফের (সা.) চাল ৯৩.৩৮৩ টন ও দ্বিতীয় পর্যায় টিআরের (সা.) কর্মসূচির আওতায় ২৭ লাখ ২৬ হাজার ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার শতভাগ কাজের রিপোর্ট পেয়ে ওই সব সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্তকালে তিনি ওই প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি লক্ষ্য করেন। তিনি এ অভিযোগ তুলে গত ২৮ আগস্ট জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে অবগত করেন। ওই সব প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুনীতির অভিযোগ দৈনিক মাথাভাঙ্গাসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এরই প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গতকাল বুধবার ইউনিয়নের আন্দুলবাড়িয়া পুরাতন জামে মসজিদ, খাপাড়ার বাবু খানের আমবাগান থেকে বাজদিয়া রাস্তা, বাজদিয়া জামে মসজিদ ও অনন্তপুর কাজি  মসজিদ পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মসজিদ কমিটি ও বিভিন্ন সামাজিক ব্যক্তিবর্গের সাথে তদন্ত কমিটির নেতৃবৃন্দ কথা বলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তদন্ত কমিটি আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শন করে।  তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দেব প্রসাদ পালের নিকট উথাপিত অভিযোগের কোনো অসঙ্গতি পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত চলছে, শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখনই কিছু বলা যাবে না। তবে স্বচ্ছ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, জীবননগর উপজেলায় কাবিখা, কাবিটা, টিআর ও জিআর প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুনীতির অভিযোগ ওঠায় জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস গত ৮ সেপ্টেম্বর ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। গঠিত তদন্ত কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্য হলেন- জীবননগর উপজেলা নিবার্হী অফিসার নুরুল হাফিজ। অপরদিকে উপজেলার ২শ স্থানে ধর্মীয় ওয়াজ মহাফিল ও নামযজ্ঞের নামে ৬০০ টন জেনারেল রিলিফ জিআরের চাল আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় জীবননগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নুরুল হাফিজকে আহ্বায়ক করে ১ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকেও ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।