জীবননগরের কুলতলায় দু পক্ষের উত্তেজনা কমেনি

তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে জোরপূর্বক ঘরে তুলে দেয়া নিয়ে তুলকালাম

 

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ঘরে তুলে দেয়াকে কেন্দ্র করে জীবননগরের কুলতলা গ্রামে সংঘষের ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত নাবালিকা জুলি খাতুনের মৃত্যুর গুজবে গ্রামে উত্তোজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ গুজব নিয়ে সম্ভাব্য সংঘর্ষের আশঙ্কায় গ্রামে গত বুধবার পুলিশি টহল বাড়ানো হয়। টহল পুলিশে বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বাড়িঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও মহিলাদের ওপর হামলা ও অশালীন আচারণের। ক্ষতিগ্রস্ত পবিবারের সদস্যরা পুলিশের বিরুদ্ধে তাণ্ডবের অভিযোগ আনে। এ ঘটনায় পুলিশ দায়িত্ব পালনে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। এদিকে গত বুধবার বিকেলে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত নাবালিকা জুলিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার পরার্মশ দিয়ে ছাড়পত্র দিয়েছেন। তার জ্ঞান ফেরেনি। খাওয়া দাওয়া বন্ধ। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের কুলতলা গ্রামে সরেজমিনে আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশী জনৈক এক মহিলা জানান, হামলায় আহত হওয়ার পর তারা কেউ বাড়িতে নেই। আহত জুলি তার চাচা লুৎফর রহমানের বাড়িতে রয়েছে। লুৎফর রহমানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের সদস্যদের মাঝে অজানা আতঙ্ক। ঘরের মধ্যে আহত জুলি খাতুনকে সেবা করছে কয়েকজন নারী। গত বুধবার বিকেলে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীরের নির্দেশে পুলিশ গ্রামে ঘণ্টাব্যাপি ঝটিকা টহল দেয়। গ্রামের এনামুল, তরিকুল, আলী, একরামুল, নজির, সাইফুল, বকুল, ইমদাদুল, আশাদুল, ওহেদুল, একরামুলসহ অনেকে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, কোনো অভিযোগ ছাড়াই পুলিশ বাড়িতে ঢুকে ভাত ছিটিয়ে ফেলে হাড়ি, কলস, থালা ও চুলো ভাঙচুর করে। প্রাপ্ত তথ্য ও অনুসন্ধান নিয়ে জানা গেছে, কুলতলা গ্রামের মৃত মাওলা করিমের ছেলে জিয়াউদ্দিন জিয়া গ্রামেরই সাইদার আলীর মেয়ে রাবেয়া খাতুনকে বিয়ে করে ৩ সন্তানসহ বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি স্ত্রীর পরকীয়া কর্মকাণ্ড স্বামী দেখে ফেলায় তাকে তালাক দেন। গত শনিবার রাবেয়া খাতুনকে তার পিতাপক্ষ জিয়া উদ্দিনের বাড়িতে জোরপূর্বক তুলে দিলে জিয়ার ভাই হাশেমসহ স্বজনরা তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ঘরে তুলে দেয়ার প্রতিবাদ করেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাইদার পক্ষ বেধড়ক মারপিট করে মহিলাদের। এ নিয়ে গ্রামে উত্তোজনা চলছিলো। সন্ধ্যায় দু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আব্দুস সালাম মোল্লার ছেলে সাইফুল (৩২), ইহান নবীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৫৩) ও তার নাবালিকা মেয়ে জুলি খাতুন (১৪) রক্তাক্ত জখম হন। তাদেরকে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আনোয়ার হোসেন ও তার মেয়ে জুলি খাতুনের অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর আড়াইশ’ বেড হাসপাতালে রেফার করা হয়। এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেনের ছেলে মহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বলে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমাযুন কবীর মাথাভাঙ্গাকে নিশ্চিত করেন। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে উথতাপিত অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, পুলিশের হাড়িপাতিল ভাঙা কাজ নয়। পুলিশ গ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও আসামি ধরতে যায় তারা।