জঙ্গি সন্দেহে চুয়াডাঙ্গার একটি বাড়িতে গভীর রাতে র‌্যাবের ২ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান

 

স্টাফ রিপোর্টার: জঙ্গি আছে সন্দেহে চুয়াডাঙ্গার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে জেলা শহরের শান্তিপাড়ার প্রবাসী আক্কাস আলীর বাড়িতে ওই অভিযান চালানো হয়। তবে বাড়ির লোকজন বলেছেন শাদা পোশাকে তাদের বাড়িতে ঢুকে লঙ্কাকাণ্ড চালিয়েছে ৭-৮ জন। ঘরের দরজা খুলতে না চাইলে তিন তলার সিঁড়ি ঘরের ছাউনির টিন কেটে ঘরে ঢোকে তারা। এ সময় ঘরের জিনিস ও আসবাবপত্র তছনছ করা হয়। অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ও ভয় ভীতি দেখানোর সময় বাড়ির শিশুরা পর্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। প্রায় দু ঘণ্টা যাবৎ অভিযানের সময় প্রতিবেশীরাও আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। তবে র‌্যাব বলেছে, ওই বাড়িতে জঙ্গি ছিলো। জঙ্গিদের ধরতেই অভিযান চালানো হয়।

এলাকাসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার শান্তিপাড়ার কুয়েত প্রবাসী আক্কাস আলীর দোতলা বাড়ির নিচ তলায় ছাত্র মেস ছিলো। মাস দেড়েক আগে মাড়ির মালিক ওই মেস তুলে দেন। দিন বিশেক আগে সেখানে ভাড়াটে হিসেবে সপরিবারে ওঠেন জেলা শহরের বিশিষ্ট চশমা ব্যবসায়ী সাগর অপটিকসের স্বত্বাধিকারী বেলাল হোসেন।

বেলাল হোসেনের বড় ছেলে ইমদামুল হক সাগর জানান, ‘মঙ্গলবার দিনগত রাত সোয়া ১টার দিকে ওই বাড়িতে শাদা পোশাকে ৬-৭ জন এসে ঘরের ক্লপসিবল গেট খুলতে বলেন। তারা র‌্যাবের পরিচয় দেন এবং পরিচয়পত্রও দেখান। কিন্তু তাদের হাতে রাম দা থাকার কারণে ডাকাত বলে সন্দেহ হয়। প্রায় আধাঘণ্টা বাগবিতণ্ডার পর তাদের দুজন জানালা বেয়ে তিনতলার সিঁড়ি ঘরের ছাউনির টিন কেটে ঘরে ঢোকেন।’ সাগর বলেন, এ সময় আমার মাথায় পিস্তল ধরেন তারা। পরে তালা খুলতে বাধ্য হই আমি। এ সময় র‌্যাব পরিচয়ের ৬-৭ জন ঘরে ঢুকে পড়েন।’

ভাড়াটে বেলাল হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম জানান, ‘তাদের অস্রাব্য কথা বার্তা শুনে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তারা ঘরের আসবাবপত্র ও কাপড় চোপড় তছনছ করে।’ সাগরের ছেলে ৯ম শ্রেণির ছাত্র ইমতিয়াজ করিম জানায়, ‘তারা আমাকেও আজেবাজে কথা বলে এবং আমার দিকে পিস্তল নিশানা করেন।’

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মুন্সি রেজাউল করিম খোকন বলেন, আমি বিষয়টি সকালে শুনেছি। পরে দেখেও এসেছি বাড়িটি। সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক জানান, খবর পেয়ে রাত ৩টার দিকে ওই বাড়িতে ডিবি পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছিলাম। তারা গিয়ে র‌্যাবের একটি টিমের তল্লাশি দেখেছে। তবে জেলা ডিবি পুলিশের ওসি নাজমুল হুদা বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তাছাড়া ডিবির কেউ গেলে আমাকে না জানিয়ে যাওয়ার কথা নয়।’ ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬’র কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির বলেন, ‘ওই বাড়িতে জঙ্গি ছিলো। জঙ্গিদের ধরতেই অভিযান চালানো হয়। তবে বাড়ির লোকজন অনেক দেরিতে ঘর খোলার কারণে তাদের সহযোগিতায় জঙ্গিরা পালিয়ে গেছে। বাড়ির লোকজনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, র‌্যাবের কেউ সিঁড়ি ঘরের টিনের ছাউনি কাটেনি। তারাই কেটে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। তিনি বলেন, র‌্যাব শাদা পোশাকে নয় র‌্যাবের ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় ছিলো। তাদের হাতে কোনো ধারালো অস্ত্র ছিলো না।’