চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চোরের উৎপাত লেগেই আছে : আরো এক অসহায় রোগীর টাকা চুরি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চোরের উৎপাত লেগেই আছে। গতকাল সোমবার দুপুরে চোখের পলকে এক রোগীর শয্যা থেকে নগদ প্রায় ৩ হাজার টাকা ও মোবাইলফোনসহ ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোর।

চিকিৎসার খরচ যোগাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অসহায় দরিদ্র রোগী। তিনি বলেছেন, পেটই চলে না। কষ্ট করে জোগাড় করা টাকা হাসপাতালে চোখের পলকে চুরি হলো। এখন কীভাবে হবে চিকিৎসা? এ প্রশ্ন তুলে ৬৮ বছর বয়সী রোগী শাহানা বেগম বলেছেন, স্বামী ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মারা গেছেন। এক ছেলে দু মেয়ে। ছেলেটা প্রতিবন্ধী। দোকান ছিলো শহীদ হাসান চত্বরে। তাও কয়েক বছর আগে তুলে দিয়েছে। দু মেয়ে ঘরে। কয়েক মাস পর পর পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতাই ভরসা। তা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে। রক্তশূন্যতা রোগ। রক্ত দিতে হচ্ছে। রক্ত কেনার জন্যই টাকাগুলো বিছানায় রেখেছি। একদিকে রক্ত চলছে। পাশে মেয়ে বসেছিলো। মেয়ে গেছে বাথরুমে, আর অমনি চোর টাকার ব্যাগসহ মোবাইলফোনটা নিয়ে চলে গেলো।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাস্টারপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত ফয়েজ উদ্দীনের স্ত্রী শাহানা বেগম গত শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। রক্তশূন্যতাজনিত রোগের কারণে কয়েক ব্যাগ রক্ত দিতে হচ্ছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী হিসেবে পাওয়া টাকা নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চিকিৎসার জন্য। তার শরীরে প্রয়োজন হচ্ছে বি পজেটিভ রক্ত। তিন ব্যাগ দেয়া হয়েছে। আরো দু ব্যাগ লাগবে। এরই মাঝে অসহায় রোগীর টাকাসহ মোবাইলফোনটি চুরি হলো। বিষয়টি জানার পর হাসপাতালের অন্য রোগী ও রোগীর লোকজন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চোর যেন লেগেই রয়েছে।

ঈদের আগে চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার এক রোগীর প্রায় ১৩ হাজার টাকা চুরি হয়। যার মধ্যে চিকিৎসার জন্য মেয়ের ধার করা ১০ হাজার টাকা। সেই রোগীর অপারেশন এখনও হয়নি। এছাড়া রোগীর ওষুধপথ্যসহ মূল্যবান মালামাল মাঝে মাঝেই চুরি হচ্ছে। চোর ধরা পড়ছে না। স্থানীয়দের অনেকেই বলেছেন, মাদকাসক্ত চোরচক্র দিনে-রাতে প্রায় সব সময়ই ঘুর ঘুর করে। সুযোগ পেলেই চুরি করে সটকে পড়ে। এসব চোর অচেনা নয়। পুলিশ একটু আন্তরিক হলেই ধরা অসম্ভব নয় বলেও মন্তব্য অনেকের।