চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর টাকাসহ মূল্যবান মালামাল চুরি

রোগীর মোবাইলফোন চুরি করে সটকানোর সময় চোর আটক

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও রোগীর লোকজনের সাথে খাতির জমিয়ে কৌশলে মোবাইলফোন চুরি করে সটকানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে চোর। গতকাল শনিবার বেলা ২টার দিকে বৃদ্ধা রোগী হালিমার শয্যা থেকে তার মেয়ে রাহেলা খাতুনের মোবাইলফোন চুরি করে পালানোর সময় ধরা পড়ে আশাদুল হক (২৫)। তাকে ধরে পুলিশে দেয়ার পর গত বুধবার চুরি করা আরো একটি মোবাইলফোন তার নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রোগী ও রোগীর লোকজনের নগদ টাকা, মোবাইলফোনসহ মূল্যবান মালামাল চুরি হয়ে আসছে। ভিক্ষুকের টাকাও চুরি করতে ছাড়ে না চোরচক্র। একের পর এক চুরি হলেও চোর ধরা পড়ে না। গতকাল বেলা ২টার দিকে হাতেনাতে চোর ধরা পড়ার পর প্রকাশ পায় চুরির কৌশল। রোগী ও রোগীর লোকজনের সাথে খাতির জমিয়ে, চিকিৎসায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে সুযোগ বুঝে চুরি করে চোরচক্র। চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালপাড়ার তৈয়ব আলীর ছেলে আশাদুলও অভিন্ন কৌশলেই গতকাল হাসপাতালের ফিমেল সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধা হালিমা খাতুনের পাশের বিছানায় থাকা রোগী রিপার সাথে খাতির জমিয়ে ঘুর ঘুর করতে থাকে। রিপার সাথে খাতির জমিয়ে গত বুধবার তার মোবাইলফোনটাও চুরি করে আশাদুল। রিপা সন্দেহ করলেও আশাদুলের আসা যাওয়া এবং চিকিৎসায় সহযোগিতা করার কারণে সন্দেহের বিষয়টি প্রকাশ করেনি। গতকাল দুপুরে রিপার বিছানার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। কিছুক্ষণ পরই আশাদুল সেখান থেকে বের হয়। পাশের শয্যায় থাকা বৃদ্ধা হালিমার মেয়ে রাহেলা খাতুনের মোবাইলফোনটি না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে শুরু করে। তখনই আশাদুল হকের দিকে সন্দেহ তীব্র হয়। অপর এক রোগীর সাথে থাকা সাকিব নামের এক যুবক দ্রুত ছুটে গিয়ে হাসপাতালের নিচতলায় আশাদুলকে আটক করে। তার নিকট থেকে উদ্ধার হয় রাহেলা খাতুনের মোবাইলেফোন। আশাদুলকে পুলিশে দেয়া হয়। পুলিশ তাকে থানায় নেয়। শরীর তল্লাশি করে বেল্টের আড়ালে লুকিয়ে রাখা আরো একটি মোবাইলফোন পাওয়া যায়। এ মোবাইলফোনটি গত বুধবার রোগী রিপার নিকট থেকে চুরি করা বলে স্বীকার করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও রোগীর লোকজন দীর্ঘদিন ধরে চোরচক্রের উৎপাতে অতিষ্ঠ হলেও ধরা পড়ছিলো না চোর। গতকাল হাতেনাতে ধরা পড়া চোর আশাদুল নেশাখোর। তার বিরুদ্ধে আগেও চুরির অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য ভর্তি হয়ে টাকা হারিয়ে অনেকেই চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরেছেন। চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার সেকেন্দার আলীর স্ত্রী জাহানারা খাতুনের পেটে অপারেশনের জন্য তার মেয়ে ধার করে এনেছিলো ১০ হাজার টাকা। সেই টাকাসহ মোট ১৩ হাজার টাকা ও কানের দুল চুরি হয়। জাহানারার আর অপারেশন হয়নি। গতকাল চোর আশাদুল হাতেনাতে ধরা পড়ার পর চোরচক্রের শেকড় উৎপাটনে পুলিশি জোর তৎপরতার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতনমহল।