চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহেও সহিংসতার শঙ্কা নিয়ে আসা ২৫ অক্টোবর শেষপর্যন্ত শস্তিতেই অতিক্রম

বাড়তি সতর্ক : পুলিশের পাশাপাশি বিজিবির টহল : প্রস্তুত ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেটও : পৃথক মিছিল সমাবেশে উত্তাপ ছড়ালেও তিন জেলায় ঘটেনি অপ্রীতিকর ঘটনা 

 

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ মিছিল বের না করলেও জেলা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। মেহেরপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মিছিল করলেও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আলমডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের দু পক্ষের একপক্ষ মিছিল ও সমাবেশ করেছে, অপরপক্ষ করেছে সভা। ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের মিছিলে ছিলো দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র। বিএনপির মিছিলে তেমন কিছু প্রকাশ্যে দেখা মেলেনি। অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হরিণাকুণ্ডুতে পুলিশি হস্তক্ষেপে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পৃথক সময়ে মিছিল ও সমাবেশ করেছে। পরিবেশ সকালে উত্তেজনাপূর্ণ থাকলেও পরবর্তীতে শান্তিপূর্ণ হয়ে ওঠে। দর্শনায় আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ প্রস্তুতি নিলেও মিছিল করেনি। বিএনপি ও জামায়াতকে দর্শনার রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি। মেহেরপুরের গাংনীতে আওয়ামী লীগ মিছিল মিটিং করেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে সঙ্কিত জনতা গতকাল জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জেলা শহরে বের হয়নি। শহরের  মসজিদগুলোর দিকেও পুলিশের নজরদারি ছিলো।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ প্রশাসন সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থা নেয়। সকাল ১০টার দিকে শহরে বিজিবির টহল চোখে পড়ে। আওয়ামী লীগ মিছিল বের করতে পারে বলে খবর ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগ মিছিল করেনি। তবে আলমডাঙ্গায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শামসুল আবেদীন খোকনের নেতৃত্বে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ একই অংশ গতপরশু বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে ছাত্রলীগের মিছিল ও সমাবেশ অংশ নিয়ে আলোচনায় উঠে আসে। চুয়াডাঙ্গা বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগের সহিংসতা নিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন যতোটা না শঙ্কিত ছিলো তার চেয়ে ঢের বেশি শঙ্কিত ছিলো চুয়াডাঙ্গা বিএনপির সাথে বিএনপির মুখোমুখি হওয়া নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। জেলা বিএনপি দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে শহীদ হাসান চত্বরে পৌঁছুলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। ফলে মিছিলটি ফিরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশে রূপ নেয়। বিএনপির একাংশ কেদারগঞ্জস্থ কার্যালয়ে সমাবেশের আয়োজন করে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরাও তাদের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বলে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহেও দেশের অন্যান্য স্থানের মতো সহিংসতার আশঙ্কা নিয়ে সূর্য ওঠে। পুলিশের বাড়তি প্রস্তুতি জনসাধারণের নজর কাড়ে। মেহেরপুরে পরশু রাতে বিজিবি মোতায়েন করা হলেও চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি নেয়া হয় গতকাল সকাল ১০টার দিকে। চুয়াডাঙ্গায় রাজনৈতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে সামনে রেখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০টা থেকে শহরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুহেল মাহমুদের নেতৃত্বে বিজিবিকে শহরে টহল রাখা হয়েছে। এর আগে চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরস্থ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর থেকে তিন প্লাটুন বিজিবিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এনে রাখা হয়। জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশকে সহযোগিতা করতেই বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরে অগণতান্ত্রিকভাবে মিছিল, মিটিং বন্ধ করা, ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহীদ হাসান চত্বরে পৌঁছুলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি এম. জেনারেল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক অ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। সমাবেশে বক্তারা দুর্নীতিবাজ, দলবাজ ও অত্যাচারী জালিম সরকারকে সরিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে সর্বস্তরের মানুষকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. আ.স.ম আব্দুর রউফ, সদর থানা বিএনপি সভাপতি অ্যাড. শামীম রেজা ডালিম, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মন্টু, সদর পৌর বিএনপি সভাপতি শহিদুল ইসলাম রতন, সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক মালিক মজু। নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, সদস্য আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, রবিউল ইসলাম লিটন, মামুন রেজা সবুজ, মখলেছুজ্জামান, মুকুল জোয়ার্দ্দার, ফারুক মল্লিক, রুহুল আমীন জেড, আরিফুজ্জামান পিন্টু, এস.কে হাদী, হুয়ায়ুন কবীর শান্ত, আকতারুজ্জামান, তৌফিকুজ্জামান তৌফিক, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক সাবু তরফদার, থানা সহসভাপতি এম.এ সাঈদ, জেলা ওলামা দলের সভাপতি ফজলুর রহমান, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক স্বাধীন অধিকারী, জেলা ছাত্রদল যুগ্মআহ্বায়ক এমএ তালহা, যুগ্মআহ্বায়ক রাজীব খান, সুজন মালিক, মোমিনুর রহমান মোমিন, শ্রমিক নেতা শহিদ হোসেন লাড্ডু, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, ফারুক আহম্মেদ, মিলন মিয়া, শাহাদৎ মাস্টার, আতিয়ার রহমান লিটন, আসলাম উদ্দীন, আইনাল হক, পৌর বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান, আবুল বাশার, মজনু মণ্ডল, বাদশা শেখ প্রমুখ।

এদিকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের কেন্দ্র কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি একাংশের উদ্যোগে বিকেল ৩টার দিকে জেলা বিএনপির কেদারগঞ্জস্থ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সহসভাপতি সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এমএম শাহজাহান মুকুল। উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল হালিম হিরু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম বকুল, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক রউফুন নাহার রীনা, দপ্তর সম্পাদক আবু আলা শামছুজ্জামান, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. হেদায়েত হোসেন আসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহপ্রচার সম্পাদক জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খালিদ মাহমুদ মিল্টন, মুন্সি আওরঙ্গজেব বেল্টু, হাবিবুর জোয়ার্দ্দার ছটি, আব্দুল মান্নান, আবু তাহের মণ্ডল, নুরনবী ছামদানী, ইবাদত হোসেন, রমজান আলী, মাছুদুর রাইহান কাজল, জাহাঙ্গীর হোসেন, হাবিবুর রহমান শেখন, একরাম হক, মিনহাজ উদ্দীন, মাও. আনোয়ার হোসেন,  হাফেজ মাহবুবুল আলম, শাহজাহান খান প্রমুখ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

অপরদিকে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চুয়াডাঙ্গা কোর্টমোড়স্থ বিএনপির অস্থায়ী কার্যলয়ে, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা মৎসজীবীদলের সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. ওহিদুল ইসলাম ওহিদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. আরশেদ আলী কালু। উপস্থিত ছিলেন মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. আলতাফ হোসেন পিন্টু, শহিদুল ইসলাম, সেলিমুজ্জামান, আব্দুল গনি, শাহিদ, শুকুর আলী, মহিবুল ইসলাম বাবলু, শামিম, শাহিন, মাহিন, শাহা, ইকবাল, সাহারুল, জুয়েল, আলামিন, রবি, মুস্তাক, রায়হান, হৃদয়, স্বাধীন, হারুন, নাঈম, সায়েম, রিমন, রুবেল প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশটি পরিচালনা করেন পৌর বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. আজাদুল ইসলাম আজাদ।প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

আলমডাঙ্গা ব্যরো জানিয়েছে, সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেল আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য চুয়াডঙ্গা-১ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আলহাজ শেখ শামসুল আবেদীন খোকনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বেলা ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ ও ওয়াপদা চত্বরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আলমসাধুযোগে তার সমর্থনে আ.লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে থাকে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওয়াপদা চত্বর থেকে একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে আল তৈয়বা মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালমুন আহমেদ ডন। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ শামসুল আবেদীন খোকন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আয়ুব হোসেন, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি নয়ন সরকার, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি তাফসির আহমেদ লাল, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান, আ.লীগ নেতা দীপক রহমান, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল হক, ছাত্রলীগ নেতা শাহীন রেজা শাহীন, মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ। প্রধান অতিথি তার বক্তবে বলেন, এদেশে কোনোভাবেই জামায়াত-বিএনপির নৈরাজ্য বরদাস্ত করা হবে না। গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে সবকিছু হবে। সংবিধানের বাইরে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। আর এদেশে অহেতুক কারণে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ঘটানোর চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে আ.লীগ নেতাকর্মীরা দেশের জনগণের জানমাল রক্ষা করবে।

আলমডাঙ্গা ব্যরো আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলা আ.লীগ অফিসে আওয়ামী লীগের মূল ধারা এমপি ছেলুনের নেতাকর্মীরা দিনব্যাপি দলীয় অফিসে মতবিনিময়সভা করেছে। সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত ওই মতবিনিময়সভার কার্যক্রম চলে। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আ.লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আ.লীগের সহসভাপতি আওরঙ্গজেব মোল্লা টিপু, সাবেক চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মন্টু, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইয়াকুব আলি মাস্টার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, পৌর আ.লীগের সভাপতি আবু মুছা, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী খালেদুর রহমান অরুন, বিআরডিবির চেয়ারম্যান মহিদুল হক মুহিদ, ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সম্পাদক আসাবুল হক ঠাণ্ডু, আহসান মৃধা, সমির কুমার দে, প্রশান্ত অধিকারী, হালিম মণ্ডল, সহিদুল ইসলাম, খবির ইদ্দন, আব্দুল গাফফার, সোনাহার, টগর প্রমুখ। সভার মূল লক্ষ্য ছিলো শহরে যাতে কোন রকম বিশৃঙ্খলা না ঘটে। গতকাল আলমডাঙ্গা শহরে কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় ১৮ দলীয় জোটের কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় ২৫ অক্টোবর পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণের লক্ষ্যে উপজেলা বিএনপি জরুরিসভা করেছে। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় অফিসে উপজেলা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী শাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরিসভায় উপস্থিত ছিলেন কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু, সহসভাপতি পিয়ার আলী, কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নতিপোতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান টুনু, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. হায়দার আলী, জুড়ানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আ. আজিজ, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, বিএনপি নেতা জহিরুল ইসলাম রিপন, নওশাদ আলী, আব্দুল আলিম, আজিম, কাশেম, ইনজিল, যুবদল নেতা আব্দুল রশিদ, তারিক মোহাম্মদ, জেলা ছাত্রদলের সদস্য ফিরোজ হাসান মন্টু, ইমতিয়াজ হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা ১৮ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত যেকোনো আন্দোলন কর্মসূচিতে একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ার লক্ষ্যে সকল নেতাকর্মীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, সরকার পতন আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এমপি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় মেহেরপুর শহরে কাথুলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ১৮ দলীয় জোট। পৌর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সাবেক এমপি মাসুদ অরুন বলেন, জনরোষে সরকার ভীত হয়ে পড়েছে। ২৫ অক্টোবরের পর সরকারের বৈধতা নেই। তাই গণঅভ্যুণ্থানের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচারী সরকারকে পরাজিত করে জনগণের বিজয়কে নিশ্চিত করতে হবে। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির আলহাজ মাও. সিদ্দিকুর রহমান, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, জেলা জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আহ্বায়ক শেখ সাঈদ আহমেদ সাঈদ, জেলা জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ফারুক হুসাইন, নায়েবে আমির সিরাজুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ইলিয়াস হোসেন, জেলা কৃষকদলের সভাপতি আব্দুর রব মাস্টার, পৌর সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর যুগ্মসাধারণ সম্পাদক তারিক মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাও. রুহুল আমীন। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুদ্দিন বিশ্বাস, বিএনপি নেতা পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলম, মুজিবনগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশিদ প্রমুখ।

এর আগে সাবেক এমপি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি মেহেরপুর পৌর কলেজ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে মিলিত হয়। এর আগে সকাল থেকে প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে শ’ শ’ নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেয়।

অপরদিকে মেহেরপুর জেলা বিএনপির আয়োজনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে মেহেরপুর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভার আয়োজন করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক আনছার-উল হকের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল জেলা বিএনপির শাহাজীপাড়াস্থ কার্যালয় থেকে বের হয়ে থানা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ের পথসভায় মিলিত হয়। পথসভায় সভাপতিত্ব করেন পৌর বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক আনছার-উল হক। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক কালু, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মোখলেছুর রহমান স্বপন, বিএনপি নেতা আব্দুল কুদ্দুস কাল্টা, রমজান আলী মেম্বার, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বড় বাবু, যুগ্মআহ্বায়ক প্রভাষক ফয়েজ মোহাম্মদ, সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি হাসিবুজ্জামান স্বপন, সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান মুকুল, পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান তপন, সদর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি নূর তাজুল, পৌর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আনিসুর রহমান লাবলু, রুহুল আমীন, সদর থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান পলাশ, পৌর যুবদলের যুগ্মসম্পাদক সামসুল আজম লিণ্টু, মাহিনুর বাবু, যুবদল নেতা একরামূল হক একা, আজমল হোসেন মিন্টু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. মোস্তাকিম, সহসভাপতি মীর আলমগীর ইকবাল আলম প্রমুখ।

মেহেরপুর অফিস আরও জানিয়েছে, মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের আন্দোলনে ভয় দেখাবেন না। আওয়ামী লীগ যেমন আন্দোলন করতে পারে; তেমনি আন্দোলন প্রতিহত করতে জানে। অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিরোধীদলের নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারার প্রতিবাদে মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য ওই কথা বলেন। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুজিবনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান চাঁদু, জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, জেলা যুবলীগের সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল আলম সাজ্জাদ, শহর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল, থানা কৃষকলীগের সভাপতি জাফর ইকবাল, জেলা যুবলীগের যুগ্মসম্পাদক নিশান সাবের, সদর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, পৌর কাউন্সিলর সৈয়দ মঞ্জুরুল কবির রিপন, যুবলীগ নেতা জসিউর রহমান বকুল প্রমুখ। পরে শহর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে একই স্থানে শেষ হয়। মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মোল্লা, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান হিরন, মাহফিজুর রহমান মাহবুব, কোষাধ্যক্ষ মাহফুজুর রহমান রিটন, সদর উপজেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলন, শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ১৮ দলীয় জোটের ঘোষিত কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে মেহেরপুর গাংনী উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে গাংনী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকলেছুর রহমান মুকুল, আওয়ামী লীগ নেতা গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মহসিন আলী, ইয়াছিন রেজা, উপজেলা যুবলীগ যুগ্মসম্পাদক মজিরুল ইসলাম, ধানখোলা ইউপি আ.লীগ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু, বঙ্গবন্ধু স্মৃতিক্লাবের সভাপতি আশিকুর রহমান আকাশ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রেজা সেন্টু, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বলসহ নেতৃবৃন্দ। এ সময় জামায়াত-বিএনপিবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর শহরে বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নেয় নেতাকর্মীরা। তবে বিএনপি কিংবা জামায়াত নেতার্কীরা কর্মসূচি পালনে রাজপথে নামেনি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিলো। জনমনে উদ্বেগ উৎকন্ঠা থাকলেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই দিনটি অতিবাহিত হয়েছে।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় জেলার মহেশপুর শহরে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

শৈলকুপা উপজেলা শহরে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শহরে রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল বের করে। এ সময় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কালীগঞ্জ উপজেলায় মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সকাল ১১টার দিকে শহরের নীমতলা মোড়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান ও জামায়াতের আমির ওলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে এ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়। হরিণাকুণ্ডুতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএ মজিদের নেতৃত্বে মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে গতকাল শুক্রবার সকালে শহরের এইচএসএস সড়ক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা বিএনপি। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মসিউর রহমান। পরে শহরের পোষ্ট অফিস মোড়ে সমাবেশে বক্তারা সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানান। বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই এমপি। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সমাবেশে বক্তারা বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি প্রতিহত করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

এদিকে জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম জানান, সমঝোতার ভিত্তিতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে মিছিল সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। জেলা শহরে সকালে বিএনপি ও বিকলে আওয়ামী লীগ মিছিল সমাবেশ করে।

হরিণাকুণ্ডু প্রতিনিধি  জানিয়েছেন, দেশের অন্যান্য স্থানের মতো ঝিনাইদহেও গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় দলই বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ঘোষণা করায় জনমনে দেখা দেয় চরম আতঙ্ক। এছাড়া বিরোধীদলের নৈরাজ্য প্রতিরোধে নামে পুলিশি অ্যাকশানও শিবিরের মধ্যে অনেকটা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলে বিরোধীদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। ২৫ অক্টোবর ঘিরে টান টান উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে আওয়ামী লীগ নেতা সফিকুল ইসলাম এমপি ও বিএনপি নেতা সাবেক এমপি মসিউর রহমানের সাথে বৈঠক করে উভয় নেতা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করেন। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিএনপি এবং দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ দলীয় কর্মসূচি পালন করার বিষয়ে তারা ঐক্যমত্য পোষণ করেন। উভয় দলের দু শীর্ষ নেতার এ সিন্ধান্ত রাতেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়। বিএনপি জেলা সদরে বেলা ১১টায় একটি দীর্ঘ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পোস্টঅফিস মোড়ে সমাবেশে মিলিত হয়। জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক অ্যাড. এমএ মজিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দলের জেলা সভাপতি মসিউর রহমান।

এদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা বিএনপি বেলা সাড়ে ১০টায় প্রিয়নাথ হাই স্কুল মাঠ থেকে একটি সুশৃঙ্খল মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হাসপাতাল মোড় বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে দলের উপজেলা সভাপতি আবুল হোসেন চেয়ারম্যানের বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জিন্নাতুল হক খাঁন, ইয়াকুব হোসেন মণ্ডল, আবুল হাসান মাস্টার, জমির উদ্দিন মোল্লা, তাইজাল হোসেন, মতিয়ার রহমান, আজিজুল হক, সরোয়ার মণ্ডল, বসির উদ্দিন, আব্দুল মমিন, রবিউল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, আব্দুস সামাদ, আকতারুজ্জামান, আমিরুল ইসলাম, হাফিজ উদ্দিন, শফি উদ্দিন, প্রমুখ।

অন্যদিকে বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকে দলটির নেতাকর্মীগণ উপজেলা সদরের দোয়েল চত্বরে সমাবেত হতে শুরু করে। বিকেল ৪টায় আওয়ামী লীগ মিছিল নিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দোয়েল চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। দলের উপজেলা আহ্বায়ক মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দার চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে এবং রাফেদুল হক সুমনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা উপজেলা প্যানেল চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম টানু মল্লিক, পৌর মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টু, আমিরুজ্জামান পলাশ চৌধুরী, কামাল হোসেন, আব্দুল হান্নান, ছাত্রনেতা রাজু আহম্মেদ, রিগ্যান আলী প্রমুখ। উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন দোয়েল চত্বরে থানা অফিসার ইনচার্জ মহিবুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অর্ধশতাধিক সদস্য দিনভর যেকোনো নাশকতা রুখতে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করে।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে, বিএনপির পূর্ব ঘোষিত সমাবেশকে ঘিরে গতকাল শুক্রবার ছিলো সারাদেশে আতঙ্ক উৎকণ্ঠার দিন। দর্শনায় বিএনপি-জামায়াতের অরাজকতা রুখতে পুলিশের পাশাপাশি কঠোর অবস্থানে ছিলো আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। দর্শনা ছিলো স্বাভাবিক।

মহেশপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে মহেশপুর ডিগ্রি কলেজমাঠে ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির উপজেলা সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম মাস্টার। বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য মতিয়ার রহমান, থানা সভাপতি আব্দুল হাই, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুর রহমান, শাহজাহান মোহন, ফারুক হোসেন, জুগলুল পাশা, আল ইমরান টাইগার, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।