চুয়াডাঙ্গা বেগমপুরের শিমচাষিরা এ বছর বাজার দর ভাল পাওয়ায় বেশ খুশি

নজরুল ইসলাম: খাদ্যশস্য উৎপাদনের পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বেগমপুর ইউনিয়নের ৩/৪ গ্রামের কৃষকরা শিম চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। বদলে দিয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র। এক সময় শুধু ইরি-বোরো ও আমন চাষের পাশাপাশি প্রচলিত কিছু শাকসবজি চাষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো তাদের কৃষিকাজ। কিন্তু এখন আধুনিক পদ্ধতিতে শিমসহ নানা জাতের সবজি আবাদ করে কৃষকরা আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। ইউনিয়নের বেগমপুর, দোস্ত, কুন্দিপুর, ডিহি, রোনগোহাইল গ্রামের কৃষকদের কাছে শিমচাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রামের মাঠে দেখা যায় আবাদযোগ্য জমিজুড়ে শিম আর শিম। মাটি থেকে সর্বোচ্চ ৪-৫ ফুট উচু বাঁশের মাচা তৈরি করে আবাদ করা হয়েছে উচ্চ ফলনশীল রুবভান ও অটো জাতের শিম। শিম চাষ এলাকাটিকে সাজিয়েছে সবুজের আবরণে। সকাল-বিকেল চাষিরা তাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে শিমের পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের ডিহি গ্রামের শিমচাষি ছানোয়ার হোসেন মল্লিক জানান, কয়েক বছর থেকে তিনি শিম চাষ করে আসছেন। প্রথম বছরে ঠিকমত বুঝতে না পারায় লাভ ভালো হয়নি। তারপর থেকে চাষের কাজ বুঝে ওঠার পর ভালো লাভবান হন। তার দেখাদেখি অন্য কৃষকরা শিম চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। চাষিরা এখন ব্যাপকহারে শিমের আবাদ করছে। তারা প্রতিবছর শিম বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। শিমের পাশাপাশি বরবটি, বেগুন, ধনেপাতা, ফুলকপি, বাঁধাকপি কাকরোলসহ নানা জাতের শাকসবজির আবাদকে এলাকার চাষিরা বেছে নিয়েছে জীবন জীবিকার অবলম্বন হিসেবে। তিরি আরো জানান, এ বছরস তিনি ২ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছেন। বিঘা প্রতি আরো ১ লাখ টাকার ওপরে শিম বিক্রি করতে পারবেন। হারুন, চান্দু, কাশেম, মালেক বিশ্বাস, মনির হোসেন, নজরুল ইসলাম, শুকুর আলীসহ বেশ কয়েকজন কৃষক শিম চাষ করে বদলে নিয়েছেন নিজেদের ভাগ্য। কৃষকরা জানান, তারা এ চাষ করতে হাতে-কলমে কোনো প্রশিক্ষণ পাননি। বর্তমানে শিম চাষের নানা উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় কিছুটা বেশি। প্রতি বিঘা জমিতে শিম চাষ করতে খরচ হয় ১৬/১৭ হাজার টাকা। এখানকার কৃষকদের উৎপাদিত শিম বাজারজাত করতে অন্য কোনো স্থানে যেতে হয় না। ঢাকা থেকে পাইকারি ক্রেতারা এসে তাদের কাছ থেকে শিম কিনে নিয়ে যায়। এ বছর শিমের বাজার দর বেশ ভালো। বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ দাম থাকলে চাষিরা বেশ লাভবান হবে।

ইউনিয়ন কৃষি অফিসার  জানান, এলাকার জমি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এলাকার চাষিদের উন্নত কৃষি প্রযুক্তির আওতায় আনতে পারলে শিম চাষ গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে।