চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনী শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ২ প্লাটুন বিজিবি ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট

খাইরুজ্জামান সেতু/উজ্জ্বল মাসুদ: পৌর নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনা বিজিবি মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গতরাতেই চুয়াডাঙ্গার ৪টি পৌর এলাকায় ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ প্লাটুনই থাকবে চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করার কাজে নিয়োজিতো। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার ৪টি পৌর এলাকায় সর্বশেষ মোট ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করা হয়েছে। পূর্বেই নিযুক্ত করা হয় ৪ জনকে। আজ সোমবার থেকে দায়িত্ব পালন করছেন আরো ১২ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় নিযুক্ত রয়েছেন মোট ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার ৪টিসহ দেশের ২২৯টি পৌরসভা নির্বাচনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খানের কাছে পাঠানো হয়েছে। আজ ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর এসব পৌরসভায় ৪ দিনের জন্য মোট ১০২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। তবে উপকূলীয় ৬টি পৌরসভায় কোস্টগার্ড দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ ও ৱ্যাব সদস্যও মোতায়েন থাকবে। এদিকে নির্বাচনে সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ জন ফোর্স রেখে রোববার পরিপত্র জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভোটকেন্দ্রে কমপক্ষে ৫ জন (অস্ত্রসহ) ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে কমপক্ষে ৬ জন (অস্ত্রসহ) পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে বলে জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, উপকূলীয় ৬টি পৌরসভা (মুলাদী, মেহেন্দীগঞ্জ, পাথরঘাটা, রামগতি, সন্দ্বীপ ও হাতিয়া) ছাড়া বাকি ২২৯টি পৌরসভায় বিজিবি মোতায়নের সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়েছে। চিঠিতে আরো বলা হয়, ভোটার সংখ্যা ১ লাখের অধিক হলে ২ প্লাটুন এবং যে সব এলাকায় ভোটার সংখ্যা ৫০ হাজারের অধিক সেখানে এক প্লাটুনের বেশি মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ১০ হাজার ভোটার হলে এক প্লাটুনের কম বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি প্লাটুনে গড়ে ৩০ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহসীন রেজা। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৩টি পৌরসভায় একযোগে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ শেষ হবে বিকেল ৪টায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, দর্শনা ও জীবননগর পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন নাশকতা এড়াতে প্রত্যেক পৌরসভায় আগের নিয়োগকৃত ম্যাজিস্ট্রেট বহাল রেখে নতুন আরো ৩ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আর এজন্য জেলার বাইরে থেকে ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট এনে নিয়োগ করা হয়েছে। ৪ পৌরসভায় মোট ১৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও ৪ পৌরসভায় মোট ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ২, আলমডাঙ্গায় ১, দর্শনায় ১ ও জীবননগরে ১ প্লাটুন। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করা দেখাশোনার জন্য আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ করা হয় চুয়াডাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফুল আলমকে। আজ থেকে নিয়োগ করা হয়েছে আরো ৩ জনকে। এরা হলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আহসানুর রহমান হাসিব, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম মামুন উজ্জামান, সহকারী কমিশনার মুনিবুর রহমান।
আলমডাঙ্গা পৌরসভায় আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ করা হয় আলমডাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনিয়া হাসানকে। আজ থেকে নিয়োগ করা হয়েছে আরো ৩ জনকে। এরা হলেন বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্টের উপপরিচালক সিনিয়র সহকারী সচিব ফখরুল ইসলাম, সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি একান্ত সচিব সিনিয়র সহকারী সচিব সোনা মনি চাকমা, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ কামরুল হাসান। দর্শনা পৌরসভায় আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ করা হয় দামুড়হুদা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল হামিদকে। আজ থেকে নিয়োগ করা হয়েছে আরো ৩ জনকে। এরা হলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাহ আব্দুল তারিক, চুয়াডাঙ্গার সহকারী কমিশনার সৈয়দা নাফিস সুলতানা ও টুকটুক তালুকদার। জীবননগর পৌরসভায় আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ করা হয় চুয়াডাঙ্গার সহকারী কমিশনার ফারজানা খানমকে। আজ থেকে নিয়োগ করা হয়েছে আরো ৩ জনকে। এরা হলেন বরিশাল সিটি কপোরেশনের সচিব আবু সাঈদ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়ামিন খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন।