চার দিনে বাংলাদেশে ১৮ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

স্টাফ রিপোর্টার: মিয়ানমারের রাখাইনরাজ্য থেকে গত ৬ দিনে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ঢুকেছে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা। তারা উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, টেকনাফের লেদা ও বাহারছড়া এলাকায় অবস্থান করছে। গত ২৪ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের ২০টির বেশি সীমান্ত ফাঁড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সেখানে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে সেনা ও পুলিশ। সেনাদের গুলিতে ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে শতাধিক ব্যক্তি। রোহিঙ্গাদের শ’ শ’ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। বাস্তুহারা রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করছে। বুধবার বেলা ১১টায় আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর কক্সবাজার কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলন ডেকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরেন-আইওএম কক্সবাজার উপপ্রধান কার্যালয়ের মুখ্য কর্মকর্তা সংযুক্তা সাহানি। তার দাবি, ২৪ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ৬ দিনে প্রায় ১৬ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে।

সংযুক্তা সাহানি বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে আরও অনেক রোহিঙ্গা। তবে এর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। ১৮ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যাটাও আনুমানিক এবং পর্যবেক্ষণের ওপর নির্ভর করে তৈরি। গত বছরের অক্টোবরের সহিংসতায় যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে এসেছিলো তাদের মধ্যে পুরুষ, নারী শিশু প্রায় সমানই ছিলো উল্লেখ করে আইওএম-এর এই কর্মকর্তা বলেন, কিন্তু এবার যারা প্রবেশ করেছে তাদের বেশির ভাগই নারী, শিশু ও বয়স্ক। যুবক পুরুষের সংখ্যা খুবই কম। যারা প্রবেশ করছে তারা উখিয়া উপজেলার কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবির, বালুখালী অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবির, টেকনাফের বাহারছড়া সমুদ্রউপকূলের শাপলাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছে। অনেকে আবার কুতুপালং নিবন্ধিত শিবিরেও ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে।

সংযুক্তা সাহানি বলেন, যারা এই কয়দিনে চলে এসেছে এই মুহূর্তে তাদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাদের বাঁচিয়ে রাখা বেশি জরুরি। এজন্য রোহিঙ্গাদের নিয়ে চলমান কর্মসূচির আওতায় নতুন আসা রোহিঙ্গাদের বেঁচে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন সব এনজিও সংস্থার সমন্বয়ে তা করা হচ্ছে। তবে এ সহায়তা একেবারেই অপ্রতুল। রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোহিঙ্গারা কিভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে তা তাদের দেখার বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেন সাহানি। বলেন, কোনো রোহিঙ্গা যখন তাদের কর্মসূচি এলাকায় চলে আসে তখন তাদের জীবনের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সকল সহায়তা দেয়াটা জরুরি। এখন যেসব রোহিঙ্গা আসছে তারা যদি শরীরে কোনো রোগ বহন করে তাহলে স্থানীয় জনগোষ্ঠির জন্য তা হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে নতুন আসা এসব রোহিঙ্গাদের টিকা দেয়ার জন্য সরকার ও এনজিও সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।