চকচকে মোড়কে নকল ভুট্টাবীজ উদ্ধার : বস্তাভর্তি বীজে সিলগালা

বিভিন্ন জাতের নকল বীজে বাজার সয়লাব : দর্শনা ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারে অভিযান

দর্শনা অফিস: দামুড়হুদা ও আশপাশ এলাকায় বিভিন্ন জাতের নকল ও নিম্নমানের বীজে সয়লাব হয়ে পড়েছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশের পর থেকে নড়েচড়ে বসেছে কৃষি কর্মকর্তারা। তারা শুরু করেছে নকল বিরোধী অভিযান। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা নকল বিরোধী অভিযান চালিয়েছে দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নকল ভুট্টাবীজ। বস্তাভর্তি বীজে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারের বিরুদ্ধে চলছে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি।

সম্প্রতি দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় নকল বীজ বিকিকিনিতে চাষিকূল ক্ষতিগ্রস্ত সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা দফায় দফায় নকল বিরোধী অভিযান শুরু করেছে। এ অভিযানের মধ্যেও নকল বীজ বিক্রি বন্ধ করেননি অনেকেই। দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন জাতের নকল বীজসহ নিম্নমানের কৃষি সামগ্রী বিক্রি করে চাষিকূলকে ঠকাচ্ছে। এ রকম অভিযোগের ভিত্তিতেই গতকাল রোববার সন্ধ্যায় দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃপাংশু শেখর বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি দল নকল বিরোধী অভিযান চালান ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারে। ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় আলফা সীড ইন্টারন্যাশনালের চকচকে মোড়কে রাখা ১৬৬ প্যাকেট নকল ভুট্টাবীজ। উদ্ধারকৃত বীজ বস্তাভর্তি করে সিলগালা করা হয়েছে। ভুট্টাবীজের মোড়কে যে কোম্পানির নাম ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিক কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ওই কোম্পানিকে চিঠি দেয়া হতে পারে। সে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারের সত্ত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে। এ দিকে উপজেলা কৃষি বিভাগের গুটি কয়েক অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অনেকেই নকল বীজ বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেছে কেউ কেউ। এরই মধ্যে ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারের সত্বাধিকারীকে রক্ষার চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগের কেউ কেউ। কেন এবং কি কারণে তাকে রক্ষার অপচেষ্টা চলছে তা খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে ফরহাদ বীজ ভাণ্ডারের সত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী সরকারের ছেলে ফারুক হোসেন দাবি করে বলেছেন জব্দকৃত ভুট্টাবীজ আসল। তিনি উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল কবির পল্লবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আরো বলেন Ô‌‌‌গতকাল রোববার দুপুর ২টার দিকে চুয়াডাঙ্গার সরকারি কোরিয়ান গোডাউন থেকে কিনে আলমসাধুযোগে গমবীজ আনার পথে দর্শনা আনোয়ারপুরে গতিরোধ করেন পল্লব। তিনি নিম্নমানের গমবীজ বলে দাবি করেন ২০ হাজার টাকা। বীজ ভালো ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকায় পল্লবের সাথে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিই। পরে পল্লব কয়েক দফায় আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টাকার জন্য ধরনা দেয়। টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ধ্যায় উপজেলা কৃষি অফিসারকে ভুল বুঝিয়ে অভিযান চালান। এ অভিযানের পরেও সে সবকিছু ম্যানেজ করবে বলে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। সন্ধ্যার পর থেকে টাকার জন্য পল্লব একাধিকবার তাগিদও দিয়েছেন। জব্দকৃত বীজ সঠিক হওয়ায় তাকে কোনো প্রকার টাকা দিতে রাজি হইনি।’ এ দিকে অভিযুক্ত রবিউল কবির পল্লবের কাছে জানতে চাওয়ার জন্য তাকে একাধিকবার মোবাইলফোনে চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইলফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি