গোবিন্দগঞ্জ থানায় কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জ থানা হেফাজতে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ১৭ বছর বয়সী মেয়েটির বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। তাকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে গত শুক্রবার রাতে মেয়েটিকে বাদী করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। তবে, মেয়েটি ওই পুলিশ সদস্যদের নাম বলতে পারেনি। এ ঘটনা তদন্তে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি শেখ দেলোয়ার হোসেন বলেন, গোবিন্দগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের আদেশে এ মামলা করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আহসানকে। এছাড়া আদালত ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে গাইবান্ধার সিভিল সার্জনকে। ওসি আরো জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজন ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরের অদূরে মাস্তা এলাকায় ওই কিশোরীকে কান্নাকাটি করতে দেখে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আকমল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওইদিন রাতেই তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরদিন সকালে এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। তিনি বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ ওই কিশোরীকে গোবিন্দগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. তারিখ হোসেনের আদালতে হাজির করে। আদালত ওইদিন তাকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
কারাগারের যাওয়ার পর মেয়েটি জেল সুপার শহীদুল ইসলামকে থানা হেফাজতে ধর্ষিত হওয়ার কথা জানায়। তবে ধর্ষণকারী পাঁচ পুলিশের নাম জানাতে পারেনি। জেল সুপার শহীদুল ইসলাম জানান, মেয়েটি তাকে ধর্ষিত হওয়ার বিষয়টি জানানোর পর এবং কিছুটা অসুস্থ লাগায় তাকে ২ অক্টোবর আবার গোবিন্দগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এ জবানবন্দি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৩ অক্টোবর পুলিশকে নির্দেশ দেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম। ওই কিশোরীকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আহসান হাবিব বলেন, গতকাল রোববার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। তদন্ত কাজও শুরু করা হয়েছে। গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হানিফ বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর রোববার কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। দ্রুত প্রতিবেদন দেয়া হবে। তবে পরীক্ষায় কী পাওয়া গেছে তা বলতে রাজি হননি তিনি। জেলা পুলিশ সুপার সাজিদ হোসেন বলেন, এ ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুজন হলেন- এএসপি (হেডকোর্য়াটার) আব্দুল কুদ্দুস ও এএসপি (বি সার্কেল) মাহবুব হোসেন।  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশারফ বলেন, কিশোরীর জবানবন্দিতে পাঁচ পুলিশ সদস্যের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সে পাঁচ পুলিশ কনস্টেবলের নাম জানাতে পারেনি। তাই আদালতের অনুমতি নিয়ে কিশোরীর মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হবে।