গুজব সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টিসহ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান

চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকার সম্পাদকম-লীর সাথে জেলা পুলিশের শীর্ষকর্তাদের মতবিনিময়

স্টাফ রিপোর্টার: গুজব সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সমাজ সংবাদ পরিবেশনে আরো বেশি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন। জেলা পুলিশের পক্ষে তিনি তার কার্যালয়ে স্থানীয় সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত এবং সাজগ রয়েছে। এরপরও বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার জন্য মাঝে মাঝে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। কখনো কখনো তুচ্ছ ঘটনাও বড় করে তুলে ধরার কারণে অনেকে আতঙ্কগ্রস্তও হয়ে পড়েছে। ফলে আমাদের সকলকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে আরো বেশি বেশি করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকার সম্পাদকম-লীর সাথে মতবিনিময়ে মিলত হন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) তরিকুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে জেলার আইনশৃঙ্খলা ও সম্প্রতি গুজব নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। সম্পাদকদের তরফে জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলার বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তৃণমূল পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ অফিসারদের কর্তব্যপরায়ণ হয়ে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধির তাগিদ তুলে ধরেন। গুজব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে জেলার গণমাধ্যম আন্তরিক। পুলিশ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে দ্রুত সমাজকে গুজবমুক্ত করা সম্ভব হবে বলেও মত দেন উপস্থিত সম্পাদকম-লী।
চুয়াডাঙ্গা জেলার কয়েকটি এলাকায় সম্প্রতি ডাকাতি ও ডাকাতির শিকার পরিবারের কিছু নারীর সম্ভ্রমহানির ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি ও বাড়ি থেকে মহিলাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার গুজব রটতে শুরু করে। স্বামী পরিত্যক্তার বাড়ির পাশে মাইক্রোবাস থামানো দেখে যমন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকারে অস্থির হয়ে ওঠে পরিবেশ, তেমনই পাশের পাড়ায় ডাকাতি হচ্ছেস্তুয়া খবরে ঘুম হারাম হচ্ছে খেটে খাওয়া বহু পরিবারের। গুজবে কান দিয়ে আতঙ্কের মাত্রা এতোটাই বেড়েছে যে, বাড়ির পাশে মাদকাসক্তের দাঁড়িয়ে ধূমপান দেখেই স্কুলছাত্রী দৌড়ে ঘরে উঠে অপহরক এসেছে বলে চিৎকার জুড়ে দিচ্ছে। এ খবরে মসজিদের মাইকে প্রচার করে জনগণকে সংগঠিত করে পার্শ্ববর্তী মাঠ তল্লাশির নামে ফসল বিনষ্টেরও ঘটনা ঘটছে। বৃদ্ধাকে নাকি দূর থেকে হাত তুলে কয়েকজন ডেকেছে, এ খবর শুনে দিগি¦দিক ছুটে হয়রান হয়েছেন মহল্লার সাধারণ নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর। থানায় খবর দিয়ে বেকায়দায়ও পড়তে হচ্ছে কারো কারো। পুলিশে খবর দিয়ে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে কাউকে কাউকে নিতে হচ্ছে গুজব রটনার হেডমাস্টার খেতাব। এরকমই পরিস্থিতিতে গতকাল স্থানীয় সংবাদপত্রের সম্পাদক ম-লীর সাথে মতবিনিময়ে বসে জেলা পুলিশের শীর্ষকর্তারা। গুজব কেন রটে, কেন রটানো হচ্ছে। কোনো চক্রান্তকারী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব রটিয়ে স্বার্থসিদ্ধির পাঁয়তারা করছে কি-না তা নিয়ে বিষদে আলোচনা হয়। স্থানীয় পত্র-পত্রিকার সম্পাদকম-লীসহ কয়েকজন নির্বাহী সম্পাদকও উপিস্থিত ছিলেন।