গাছড়া ওষুধ খাওয়ানোর পর পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশুটি

আলমডাঙ্গায় ওঝার ঝাড়ফুঁক বাঁচাতে পারলো না সাপে কামড়ানো শিশু নাঈমকে

 

হাটবোয়ালিয়া প্রতিনিধি: ওঝার ঝাড়ফুঁক ও গাছ-গাছড়া বাঁচাতে পারলো না আলমডাঙ্গার মোড়ভাঙ্গা গ্রামের সাপে কামড়ানো ৮ বছরের শিশু নাঈমকে। গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পার্শ্ববর্তী গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুরের বারেক ওঝার বাড়িতে ঝাড়ফুঁক চলাকালে তার মৃত্যু হয়। স্বজনদের দাবি ওঝা শিশুটিকে অজ্ঞাত গাছ খাওয়ানোর পর পরই তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার মোড়ভাঙ্গা গ্রামের জালাল উদ্দীনের ৮ বছরের শিশুপুত্র নাঈম হোসেন স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেনের কেজি-২’র ছাত্র। নাঈমকে ঘুমন্ত অবস্থায় গত শুক্রবার দিনগত রাত ৩টার দিকে সাপে কামড়ায়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নাঈম তার মাকে জানায় যে তার বাম হাতের আঙ্গুলে কোনো কিছুতে কামড়ে দিয়েছে, যন্ত্রণা হচ্ছে। নাঈম হোসেনের মা প্রথমে ভেবেছিলো ছেলেকে হয়তো ছুঁচো কামড়ে দিয়েছে। কিন্তু কিছু সময় পর তিনি নাঈমকে স্কুলে পাঠানোর জন্য তৈরি করতে গেলে সে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে সময় পরিবারের লোকজন পার্শ্ববর্তী গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের মৃত রুহুল বিশ্বাস ওরফে খন্দকারের ছেলে ওঝা আব্দুল বারেকের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেন। দ্রুত ওঝা আব্দুল বারেকের বাড়িতে নিয়ে যায় নাঈমকে। সেখানে ঝাড়ফুঁক চলাকালে নাঈমের মৃত্যু হয়। নাঈমের ফুফাতো ভাই লোকমান হোসেন জানান, ঝাড়ফুঁক চলাকালে ওঝা নাঈমকে অজ্ঞাত গাছ খেতে দেয়। ওই গাছ খাওয়ার সাথে সাথে নাঈম নেতিয়ে পড়ে। সে মারা যায়। সে সময় ওঝা অপারগতা স্বীকার করলে মাইক্রোবাসে দ্রুত হারদী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছুলে কর্তব্যরত ডাক্তার নাঈমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হারদী হাসপাতালের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার নাজমুল হক বলেন, হাসপাতালে পৌঁছুনোর আগেইশিশুটির মৃত্যু হয়েছিল।

কী গাছ খাওয়ানো হয়েছিলো মোবাইলফোনে এমন প্রশ্ন করলে ওঝা আব্দুল বারেক বলেন, প্রথমে কোনো গাছ খাওয়ানোর কথা অস্বীকার করে। পরে একপর্যায়ে ইশেরমূল ও মহাতিতার গাছ খাওয়ানোর কথা স্বীকার করেন। গতকাল বাদ আসর গ্রামের গোরস্তানে নাঈমের লাশ দাফন করা হয়েছে।