গাংনী থানা পুলিশের সফল অভিযান – আলোচিত রাজু ও মাসুম গাঁজাসহ গ্রেফতার

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী থানা পুলিশের সফল অভিযানে দুজনকে ২শ গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হচ্ছে- শিশিরপাড়া গ্রামের বহুল আলোচিত মাসুম হোসেন (২৫) ও গাংনী থানাপাড়ার রাজু মিয়া (১৯)। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে বাঁশবাড়িয়া বিএম কলেজের পেছনে গাঁজা সেবনকালে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান গাংনী থানার ওসি। গ্রেফতার মাসুদ হোসেন মেহেরপুরের খলিলুর রহমানের ছেলে এবং রাজু মিয়া থানাপাড়ার জাহিদুল ইসলামের ছেলে। মাসুমের মা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী ফরিদা খাতুন মাসুমকে নিয়ে শিশিরপাড়া গ্রামে বসবাস করেন।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বহু অপকর্মের হোতা রাজু ও মাসুম ঘটনাস্থলে গাঁজা সেবন করছিলো। খবর পেয়ে গাংনী থানার এসআই মকবুল হোসেন ও এএসআই মামুনুর রশিদ মামুন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ তাদের দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২শ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেন। পরে থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওসি আরো বলেন, গ্রেফতার দুজন বহু আপকর্মের হোতা। চুরি, মাদক সেবন ও বিক্রি এবং ইভটিজিংসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কিছু তথ্য উদঘাটন হলেও মামলা তদন্ত ও অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশ তা গোপন রেখেছে। রাজু ও মাসুদের নামে গাংনী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলার আসামি হিসেবে গতকালই তাদেরকে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে দুজনকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত মাসুম ও রাজু। মাসুমের মা ফরিদা খাতুনের চাকরির আয়ের অর্থ দিয়ে মাসুুমের দিন চলে। বেশির ভাগ সময় একটি ডিসকভারি মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়ায়। রাস্তায় চলাচলের সময় বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ও এলোমেলো চলাচলের কারণে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। অনেকটাই প্রকাশ্যে মাদকসেবন করে। কিন্তু তার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। ১২ মার্চ রাতে গাংনী উপজেলা পরিষদের সামনের মার্কেটে দেবী জুয়েলাসের দেয়াল ভেঙে ৭ লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরি হয়। ১৭ মার্চ খাদ্য গুদামের সামনে আব্দুল খালেকের বাড়িতে সন্দেহভাবে ঘোরাঘুরি করার সময় মাসুম ও তার এক বন্ধুকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে বাড়ির লোকজন। আব্দুল খালেকের পরিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি। তবে দেবী জুয়েলার্সে চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে মাসুম ও তার বন্ধুকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। কয়েকদিন পরে জামিনে মুক্তি পায় মাসুম।
এদিকে রাজুর বিরুদ্ধে ছাত্রী উত্ত্যক্তসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি জেএসসি পরীক্ষা চলার সময় স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে করে রাজু ও তার বন্ধু মাহফুজ মাহমুদ। গাংনী সহকারী কশিনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম জামাল আহম্মেদ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রাজু ও মাহমুদকে এক বছর করে কারাদ- দিয়েছিলেন। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো সেই পূর্বের কাজের সাথে জড়িয়ে পড়েছিলো রাজু।