গাংনীর বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের মল পরিষ্কার না করায় ছাত্রকে মারপিট

 

গাংনী প্রতিনিধি: টয়লেটে শিক্ষকের মল পরিষ্কার করতে পানি না ঢালার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে মারপিট করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ও শাহীন আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এখন এলাকার মানুষের মুখে।

জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল সকালে বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) শাহীন আলী বিদ্যালয়ের টয়লেটে মল ত্যাগ করেন। টয়লেটের মল পরিষ্কার করতে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মিঠুনকে পানি ঢালার নির্দেশ দেন। শাহীন টিউবওয়েল থেকে বালতিতে পানি নিতে গেলেও কষ্টে পড়ে। একপর্যায়ে সে পানি ঢালতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক শাহীনের বন্ধু সহকারী শিক্ষক (বাংলা) বজলুর রহমান শ্রেণিকক্ষের মধ্যে নিয়ে যান মিঠুনকে। লাঠি দিয়ে তাকে পেটান। মিঠুনের পিঠ ও হাতে লাঠির আঘাতের কালশিরা দাগ পড়ে যায়। ওইদিনই বিষয়টি সে পরিবারকে জানায়। পরদিন বিদ্যালয়ে মৌখিক অভিযোগ দেয় তার পরিবার। মিঠুনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আতঙ্কিত শিশু বিদ্যালয়েও যেতে চাইছে না। এদিকে ছাত্রকে দিয়ে মল পরিষ্কারের বিষয়ে এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। শিক্ষকের এই কাণ্ডে কর্তৃপক্ষ যেমন বিবৃত তেমন বিচলিত অভিভাবককূল। শিক্ষকদের এ ধরনের আচরণে নিন্দার ঝড় ওঠে খোদ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মাঝে।

এদিকে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ ওইদিনই জরুরি বৈঠক করে অভিযুক্ত শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাদশা ও প্রধান শিক্ষক ইনামুল হক বলেন, বিষয়টি তারা গুরুত্বের সাথে দেখছেন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, বজলুর রহমানের বাড়ি ভরাট গ্রামে। গ্রামের বিদ্যালয় তাই তিনি অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগ করে শিক্ষককূলকে তটস্থ করে রাখেন। শাহীনের বাড়ি তেঁতুলবাড়িয়া হলেও বজলুর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে তিনিও অবৈধ হস্তক্ষেপ করে থাকেন। এই দুজনের দাপটে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা ঠিকঠাক কাজকর্ম করতে পারেন না। তাদের মর্জিতেই বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজকর্ম করতে হয়। তাদের পেশিশক্তির কারণে প্রতিবাদও করতে পারেন না শিক্ষকরা। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানালেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার। এই বিষয়টি ঘৃণিত উল্লেখ করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। একদিকে শিশু ছাত্রের প্রতি অনৈতিক নির্দেশ অন্যদিকে মারধরের ঘটনায় দুই শিক্ষককে নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা। তবে শিক্ষক যেই হোক না কেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। এ বিষয়ে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বললেন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ।