গাংনীর দুলর্ভপুরে আবারে এক প্রেমিকা অবস্থান নিলো প্রেমিকের বাড়িতে

 

গাংনী প্রতিনিধি: একের পর এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়েদের বিয়ে দাবির ঘটনায় বেকায়দায় অভিভাবক মহল। আইন লঙ্ঘণে বিব্রত প্রশাসন। আর ঝামেলা বাড়ছে জনপ্রতিনিধি ও সমাজপতিদের। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সামাজিক অবক্ষয় কোন পর্যায়ে নেমেছে। এমনই পরিস্থিতি বিরাজ করছে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার দুলর্ভপুর গ্রামে। গতকাল বুধবার আবারো এক ছাত্রী প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। এর মধ্যদিয়ে গত এক মাসে কয়েকজন স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়। অবস্থান নেয়া ওই ছাত্রীর নাম রিনা খাতুন। তার পিতা প্রবাসী। গতকাল বুধবার গাংনী জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পালিয়ে দুলর্ভপুর গ্রামের মাহাবুরের বাড়িতে ওঠে সে।

জানা গেছে, ভরাট বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিনা খাতুন গাংনী জেএসসি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে উপস্থিত হয়। পরীক্ষার খাতা হাতে পাওয়ার কয়েক মিনিট আগে সে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে দুর্লভপুর গ্রামের নাইজুল ইসলামের ছেলে বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মাহবুরের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। মায়ের পছন্দের অন্য এক ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে তার। এমন দাবি করে প্রেমিক মাহবুরের পরিবারকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়েলে এলাকার উৎসুক নারী-পুরুষের ভিড় জমায়।

এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তেরাইল গ্রামের ইউপি সদস্য মিলন হোসেন ও দুর্লভপুর গ্রামের ইউপি সদস্য হায়দার আলীকে বাল্যবিয়ে বন্ধের নির্দেশনা দেন। পরে দুই মেম্বার স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় ওই ছাত্রীকে অন্যত্র সরিয়ে দেন। আজ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানা গেছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান জানান, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের এ ধরণের ঘটনায় বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তবে কোনো অবস্থায় বাল্যবিয়ের ব্যাপারে আপস করা হবে না। বাল্যবিয়ে দিলে কঠোর ব্যবস্তা নেয়া হবে। বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাদশা জানান, বার বার একই রকম ঘটনা ঘটায় উদ্বিগ্ন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরা। পুনরায় যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে মতবিনিময় করা হবে।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, রিনা খাতুনের পিতা প্রবাসী। তার মা কয়েকদিন আগে এক ছেলের সাথে তার বিয়ে ঠিক করেছেন। কিন্তু মায়ের পছন্দ তার পছন্দ নয়। একারণে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবি জানিয়েছে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক একজন মেয়ে কীভাবে পরীক্ষা বাদ দিয়ে বিয়ের দাবি করে?  এ ধরনের ঘটনায় সামাজিক অবক্ষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে পারিবাকি অনুশাসন নিয়েও। গত এক মাসে একই গ্রামে ৩টি ঘটনায় গোটা এলাকার অভিভাবকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগও দাবি করেছেন তারা।