গাংনীর ছাতিয়ানে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন

গাংনী প্রতিনিধি: নতুন পুত্রবধূকে আদর আপ্যায়ন ও নানান রীতিনীতি পালনের মধ্যদিয়ে বরণ করেন শাশুড়ি। এ চিত্র আমাদের সমাজে প্রচলিত। কিন্তু হবু পুত্রবধূর সাথে শাশুড়ির চুলোচুলির ঘটনা একেবারেই অপরিচিত। গতকাল মঙ্গলবার ঠিক এমনই এক ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় প্রেমিক সেলিম রেজার বাড়িতে অনড় অবস্থান নেয় নুরজাহান খাতুন নামের এক প্রেমিকা। এ সময় সেলিমের মা পারুলা খাতুন ও ফুফু জরিমন খাতুন তার চুলের মুঠি চেপে বাড়ি থেকে বের করার চেষ্টা করেন। এতে হবু পুত্রবধূর সাথে শাশুড়িদের চুলোচুলির ঘটনা ঘটে। প্রেমিকা নুরজাহান খাতুন গাংনীর শিশিরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গনির মেয়ে এবং মেহেরপুর শহরের একটি বিউটি পার্লারের কর্মী।

নুরজাহান খাতুনের অভিযোগ, সেলিম রেজার বামন্দীর কাপড়ের দোকানে কাপড় কিনতে গিয়ে তাদের পরিচয়। এক পর্যায়ে প্রেম এবং পরিণয়ের প্রতিশ্রুতি। বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধরেই সেলিম রেজা তার সাথে মেলামেশা করে। গত কয়েক মাস ধরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে পিছলে কাটার অপচেষ্টা শুরু করে সেলিম রেজা। গোপনে গত ১৫ ডিসেম্বর কোদাইলকাটি গ্রামে বিয়ে করে। এ খবর নুরজাহান জানতো না। বিয়ের চাপ অব্যাহত রাখলে সেলিম তাকে নিয়ে যায় বাওট গ্রামে গ্রামের ফুফুর বাড়িতে। সেখানে তার অস্থায়ী ঠিকানা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সেলিমের বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে নুরজাহানের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। নিরুপায় হয়ে সে সেলিমের বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করে। এক পর্যায়ে তার পরিবারের লোকজনের মারধর ও গালিগালাজের স্বীকার হয়। তবুও বিয়ের দাবিতে অনড় অবস্থানে ছিলেন নুরজাহান। সন্ধ্যায় অবশ্য সেলিম রেজার পক্ষের কিছু লোকজন তাকে ওই বাড়ি থেকে অপসারণ করতে সক্ষম হয়। তবে বিয়ে না হলে আবারো অনশন করবেন বলে জানায় ওই ব্যর্থ প্রেমিকা।

ছাতিয়ান শেখপাড়ার মনিরুল ইসলামের ছেলে প্রেমিক সেলিম রেজা একজন পোশাক ব্যবসায়ী। বামন্দী বাজারে রেজা ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী। তিনি নুরজাহানের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, তাকে মিথ্যা অভিযোগ ফাঁসাতে সে প্রেমের নাটক করছে। তার সাথে কোনো সম্পর্ক ছিলো না। এদিকে সকালে প্রেমিকার অনশনের খবর শুনে এলাকার শ শ উৎসুক মানুষ সেলিমের বাড়িতে ভিড় করে। অবশ্য তার আগেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সেলিম। নুরজাহানকে মারধরের দৃশ্য দেখেন এলাকার অনেকেই। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেছে।