গাংনীর গাড়াডোবের সেই সালমা বিয়ের দাবিতে মাতবরদের দ্বারে দ্বারে

 

গাংনী প্রতিনিধি: স্বামীকে তালাক দিয়ে পরকীয়া প্রেমিক মনিরুলের সাথে বিয়ের দাবিতে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের পোড়াপাড়ার সেই সালমা এখন গ্রাম্য মাতবরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। প্রেমিকের বিয়ের আশ্বাসে স্বামীকে তালাক দিলেও এখন ধরা দিচ্ছে না সেই মনিরুল। গ্রামের কতিপয় মাতবর ও প্রেমিক মনিরুল গ্রাম্য বিচার এড়ানোর জন্য বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন সালমাকে পাত্তা দিচ্ছে না। নিরুপায় সালাম তাই আইনের আশ্রয় নেয়ার পথেই হাঁটছেন। সম্প্রতি মনিরুলের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় স্ত্রী সালমাকে আটক করে মনিরুলের হাতে হেঁসো দিয়ে কোপ দেয় সালমার স্বামী। ওই ঘটনার বিচারের জন্য গত ২৩ আগস্ট গ্রামে সালিসসভা বসলেও নানা কারণে বিচার হয়নি।

ভুক্তভোগী সালমা খাতুন জানান, ছেলেমেয়ে নিয়ে স্বামীর সংসার করলেও বেশ কয়েক বছর আগে থেকে একই গ্রামের দুই সন্তানের জনক মনিরুলের সাথে তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভনে মনিরুল তার সাথে মেলামেশা শুরু করে। এক পর্যায়ে স্বামীর হাতে ধরা পড়ে সালাম ও মনিরুল। এ নিয়ে সালমা ও মনিরুলের অনৈতিক কাজের বিচারের দাবিতে গ্রামের সাধারণ মানুষ স্বোচ্ছার হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে বিচার এড়ানোর রাস্তা তৈরি করে মনিরুল।

সালমার অভিযোগ, ২৩ আগস্ট গ্রাম্য সালিসে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে মনিরুল গ্রামের কয়েকজন মাতবরকে ম্যানেজ করে। সেমত সাবেক মেম্বার উসমান ও একই গ্রামের বাবলু মিয়াকে নিয়ে সালমার কাছে যায়। সালিসের আগে যদি সালমা তার স্বামীকে তালাক দেয় তাহলে আর সালিসে বিচার হবে মর্মে সালমাকে বোঝায় তারা। সালিস শেষেই সালমাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেয়ার আশ্বাস দেয় মনিরুল ও তার সঙ্গীয় দুই মাতবর। সেমতে সালমা তার স্বামীকে তালাক দেয়। বিষয়টি সালিসে জানালে বিচার সভা ভেঙে যায়। তবে সালিস শেষ হলেও সালমার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়নি। মনিরুল ও তার সঙ্গীয় দুই মাতবর তাদের প্রতিশ্রুতি রাখেনি। একদিকে স্বামীকে তালাক অন্যদিকে পরকীয়া প্রেমিক তাকে বিয়ে না করায় সালমা এখন অথই সাগরে পড়েছেন। কোন দিকে তার জায়গা না হওয়ায় বিয়ের দাবিতে গ্রামের মতবরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মাতবর জানান, সালিসে অবশ্যই তারা ন্যায় বিচার পেতেন। কিন্তু কতিপয় মাতবরের চক্রান্তে সালমা আজ পথে পথে ঘুরছেন। যেহেতু সালমা সালিস ভাঙতে বাধ্য করেছে তাই গ্রামে তার বিষয়ে কেউ আর বিচার করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধরে দেহভোগের বিষয়টি কোনোভাবেই ছাড় দিতে রাজি নন ঘরত্যাগী গৃহবধূ সালমা খাতুন। মনিরুলের বিচারের দাবিতে তিনি আইনের আশ্রয় খুঁজছেন বলেও জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনিরুলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।