গাংনীর কাজিপুর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন আর নেই

 

গাংনী প্রতিনিধি: দীর্ঘ ৩ বছর শারীরিক বিভিন্ন অসুখে ভোগার পর অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নওদাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন (৭৫)। পাবনার চাটমোহরে মেয়ে-জামাই বাড়িতে গতকাল রোববার ভোরে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহে……রাজেউন)। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজিপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি ৩ মেয়ে ও ১ ছেলেসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইউনিয়ন বিএনপির উপদেষ্টা ছিলেন।

পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর ধরে তিনি শারীরিক বিভিন্ন অসুখে ভুগছিলেন। একমাত্র ছেলে বিদেশে থাকায় তিনি পাবনায় মেয়ের বাড়িতেই বসবাস করতেন। দুপুরের পরে লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। এ সময় এলাকার হাজারো মানুষ তাকে শেষ বিদায় দিতে জড়ো হন। বিকেলে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল। রাষ্ট্রের পক্ষে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার কফিনে ফুল দিয়ে শেষ বিদায় জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান। এ সময় উপজেলা মুক্তযোদ্ধা কমান্ডার মুন্তাজ আলী মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ফুল দিয়ে শেষ বিদায় জানিয়েছেন।

এদিকে মকবুল হোসেনের জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রেজাউল হক, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু ও সাবকে মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার শামসুল আলম সোনাসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। জানাজা শেষে গ্রাম্য কবরস্তানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এদিকে অসুস্থ পিতাকে দেখার জন্য গতকাল দুপুরে ওমান বাড়ি ফেরেন প্রয়াত মকবুল হোসেনের বড় ছেলে জহুরুল ইসলাম। তবে জীবিত পিতার মুখ শেষবারের মত দেখতে না পারলেও অন্তত কবরে মাটি দিতে পারার মধ্য দিয়ে শান্তনা খুজছেন তিনি। ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনে কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন মকবুল হোসেন। ওই বছরের ১৯ মার্চ থেকে ২০১১ সালের ২৬ জুলাই পর্যন্ত তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ওয়ান ইলেভেনের কারণে নির্ধারিত সময়ে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়ায় দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পান চেয়ারম্যানরা। তবে মকবুল হোসেন ইউপি সদস্য থাকা অবস্থায় ১৯৮৫ সালে চেয়ারম্যান কাফুর উদ্দীনের একটি মামলায় সাজা হয়। এতে চেয়ারম্যান পদ শূণ্য হলে ১৯৮৮ সালের উপ নির্বাচনে মকবুল হোসেন চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছিলেন। চলতি বছরের নির্বাচনে তিনি আর প্রতিদ্বন্দীতা করেননি।