গাংনীতে মাদকসেবী-ব্যবসায়ী আত্মসর্ম্পণ অনুষ্ঠানে এসপি : – মাদকের পথ না ছাড়লে ভয়ানক পরিণতি হবে

মাজেদুল হক মানিক: মাদক ব্যবসা অমানুষ তৈরির কারখানা হিসেবে আখ্যায়িত করলেন মেহেরপুর পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান। গতকাল রোববার বিকেলে গাংনীর গাড়াবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। গাংনী থানার উদ্যোগে কমিউনিটিং পুলিশিং মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীরা তাদের ওই পথ পরিহার না করলে ভয়ানক পরিস্থিতির সম্মুখিন হবে উল্লেখ বলে পুলিশ সুপার বলেন, একটি খুনের চেয়ের মাদকের ছোবল ভয়াবহ। যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত তারা অমানুষ তৈরী করছে। তরুণ প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যত মাদকের থাবায় হারিয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে অপরাধ ও অপরাধীর সংখ্যা। মাদকের বিষয়ে মেহেরপুর জেলা পুলিশের অবস্থান জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আপনার যারা এই পথ ছেড়ে আলোর পথে আসছেন তাদের স্বাগতম। কিন্তু ওয়াদা ভঙ্গ করে যদি কেউ ওই পথে ফিরে যান তাহলে ভয়াবহ পরিরস্থিতির সম্মুখীন হবেন। যারা আজ মাদকের পথ ছেড়ে দিলেন তাদেরকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হবে। মাদক প্রতিরোধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান পুলিশ সুপার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, এএসপি (শিক্ষানবীশ) মুন্না বিশ্বাস, কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ এবং সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান রানা ও গাড়াবাড়িয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রধান শিক্ষক সুন্নত আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল পলাশ। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, আট বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের যা শেখানো হবে তা সে সারাজীবন মনে রাখবে। তাই এই বয়সের মধ্যে পরিবার থেকে নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষা দিতে হবে। মাদক প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজের দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করার বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি। মাদক প্রতিরোধে পুলিশের সুপারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের ভালো হতে আমরা অনুরোধ করছি না। তাদেরকে আলোর পথ দেখাচ্ছি। তাই আজ যারা কথা দিলেন তারা যদি বেঈমানি করেন তাহলে চরম মূল্য দিতে হবে। মতবিনিময় সভায় এলাকার মাদকের সার্বিক পরিস্থিতি ও সুপারিশ তুলে ধরেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজি শওকত আলী, ইউপি সদস্য নবিছ উদ্দীন, আজমাইন হোসেন, প্রভাষক লাবলু। পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক হোসেন আলী। অনুষ্ঠানে ৩৩ জন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী অন্ধকার পথ ছেড়ে আলোর পথে চলার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাহারবাটি চারচারা বাজারে একই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার। পুলিশের কর্মকর্তা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান তৌহিদ মোর্শেদ অতুলসহ গণ্যমান ব্যক্তিবর্গ। সাহারবাটি ইউপি থেকে ১০ জন মাদকসেবী ও মাদকব্যবসায়ী আত্মসর্ম্পণ করে।