গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর অপসারণ দাবি

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেছে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হকের ওপর বর্বোরচিত হামলার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ এ দাবি জানানো হয়। এতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে কর্মরত প্রকৌশলীরা অংশ নেন। দাবি আদায় না হলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর অচল করে দেয়াসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন প্রকৌশলীরা।এক ্রেস বিজ্ঞ্তিতে এ তথ্য জানা নো হয়েছে।
সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশল বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি এ কে এম আব্দুল মোতালেব ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গত বুধবার সেগুনবাগিচাস্থ পূর্ত ভবনে সাক্ষাত করতে যান। এসময় স্টাফ অফিসারের কক্ষে তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন প্রধান প্রকৌশলী। এর ৫/১০ মিনিটের মাথায় কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই বিনা উস্কানিতে মতিঝিল গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ নবীব আলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একদল সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় আধাঘন্টা ধরে নির্যাতন চালানো হলেও এসময় প্রধান প্রকৌশলীসহ তার অফিসের কোন কর্মকর্তা তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি। বেধড়ক পিটুনিতে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হকের ডান পা ভেঙে যায়। এ সময় হামলাকারীরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। এঘটনায় প্রধান প্রকৌশলীর ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেন প্রকৌশলীরা। এদিকে ঘটনার পর শাহবাগ থানায় অভিযোগ করা হলেও চারদিনে তা রেকর্ড হয়নি।
বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আব্দুল মোতালেবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আইডিইবি ঢাকা জেলার সভাপতি খবির হোসেন, পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক এমদাদুল হক আখন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান নয়ন, আইডিইবি কেনিকের গণসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু পিডব্লিউডি প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি ফনিন্দ্র লাল মল্ল্কি, সাধারণ সম্পাদক মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফা, বাপিডিপ্রকৌসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
বাপিডিপ্রকৌসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ঘটনাস্থল প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষের সামনের অংশ সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হয়।  সিসি ক্যামেরা দেখলেই হামলার ঘটনার  প্রমাণ এবং দায়ীদের চিহ্নিত করা যাবে। এই ঘটনার বিচার না হলে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত প্রকৌশলীরা একযোগে কর্মবিরতিতে যাবেন।
বঙ্গবন্ধু পিডব্লিউডি প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফা বলেন, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমের আত্মীয় গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম। এ কারণে গণপূর্ত অধিদপ্তরটি জামায়াত-বিএনপি সমর্থক কর্মকর্তাদের হাতে জিম্মি। শুধু প্রকৌশলী নির্যাতনের ঘটনাই নয়, এর আগেও একাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ প্রধান প্রকৌশলীর এই সিন্ডিকেটের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি এ কে এম আব্দুল মোতালেব দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম যোগদানের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী ১০৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অনৈতিকভাবে বদলি করেছেন। বর্তমানে জামায়াত ঘেঁষা কর্মকর্তারা সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরটি দখল করে যা যাচ্ছেতাই করে যাচ্ছে। এই দপ্তরের শত শত কোটি টাকা লুটপাট করে তারা জামায়াতকে শক্তিশালী করছে।
সমাবেশ থেকে আগামী ৬ থেকে ১৬ মার্চ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও ১৪ মার্চ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।