কুড়ুলগাছিতে সোনালি আঁশের স্বপ্ন বুনানো নিয়ে ব্যস্ত কৃষকরা

 

হাসেম রেজা: সোনালি আঁশ পাট নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন কুড়ুলগাছির রায়সা পাড়ের পাটচাষীরা। নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খোলার প্রত্যাশা নিয়ে চলতি মরসুমে পাট কাটা, জাগ দেয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের আবাদ ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। তবু দাম নিয়ে রয়েছে সংশয়। সময় মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাট কেটে জলাশয়ে জাগ দিচ্ছেন চাষীরা। পাট কেটে নদী, পুকুর, নালা খাল বিল ও ডোবায় জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানোসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

আবার কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষ মিলে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন। খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও তাতে আগ্রহ নেই তাদের। কৃষক যদি ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেন তাহলে লাভবান হবেন। ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষকরা আরও বেশি পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন বলে কৃষকরা জানান। কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের কৃষক হাসান আলী স্বাধীন ৫ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি। কুড়ুলগাছি এলাকার পাটচাষী মিজানুর রহমান জানান এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ পাট উৎপাদন হয়েছে। আর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের  কৃষক ইউসুফ আলী মরসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে বলে তিনি জানান। এবার তিনি ৬ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। বাজারে পাটের মূল্য নিয়ে তিনি কিছুটা সংশয়ে আছেন।

যদি সরকার পাটের ভালো দাম নির্ধারণ করে তাহলে আর্থিকভাবে কিছু লাভবান হবেন। আর লাভের মুখ দেখলে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে পাটচাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এবার গত বছরের তুলনায় এ জেলায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। এলাকার কৃষকরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারেন এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারেন এ জন্য কৃষকদের কাছে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শও দেয়া হয়েছে কৃষকদের। কৃষকরা মনে করেন পাটের ন্যায্যমূল্য পেলে চাষীদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে।