কুড়ুলগাছিতে দরিদ্র ঘরের মেয়ে সাজনী পেয়েছে জিপিএ-৫ : লেখাপড়া অনিশ্চিত

 

হাসেম রেজা: কুড়ুলগাছি মাধমিক বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে সাজনী খাতুন। হতদরিদ্র ঘরের সন্তান সাজনী খাতুন দারিদ্র্যতার কষাঘাতে খেয়ে না খেয়ে মানুষ। সেই পরিবারে লেখাপড়া করার কথাতো ভাবাই যায় না। দাদার বয়স্ক ভাতা দিয়ে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী হয় সাজনী। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার বাবা মজিবার ফেরীওয়ালা বিভিন্ন বাজারে থেকে মাছ কিনে নিয়ে গ্রামে গ্রামে বেচা-বিক্র করে চলে তার সংসার। তাই গৃহশিক্ষকও রাখা সম্ভব হয়নি। সেই সাথে ঘরের সব কাজ সামলে পড়ালেখা চালিয়ে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে সাজনী খাতুন।

সাজনী খাতুন দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের আনন্দ বাজার পাড়ার মজিবার রহমানের মেজো মেয়ে। বাড়ি সংলগ্ন কুড়ুলগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতো সে। প্রাথমিকে সে জিপিএ-৫ পেয়েছিলো , জেএসসিতেও গোল্ডেন-৫ পেয়ে বৃত্তি পায়। রান্নাবান্নাসহ বাড়ির সব কাজ ছোটবেলা থেকে তাকেই করতে হয়। মা শারীরিকভাবে প্রায় অসুস্থ থাকার কারণে সংসারের কাজে সহযোগিতা করে। বাবার আয়ে সংসারই চলে না। সেখানে পড়ালেখার খরচ জোগানো হয়নি ঠিকমতো। গাইড বই ও প্রাইভেট পড়া তো দূরের কথা। তারপরও জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। তবে দাদা, বাবা ও মায়ের উৎসাহ আছে পড়ানোর। কোনোমতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারলে ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে দরিদ্র, অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়ার ইচ্ছে আছে তার মনে।

সাজনী খাতুন জানায়, চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে আছে। চিকিৎসকই একমাত্র পেশা যেখানে মানবসেবা ও আয় একসাথে করা যায়। সাজনীর বাবা মজিবার রহমান ও মা নুরজাহান বলেন, গরিবের স্বপ্ন পূরণ হওয়া কঠিন। ইচ্ছে আছে মেয়ের পছন্দ অনুযায়ী পড়ানোর। কিন্তু সে ইচ্ছে কেমন করে পূরণ হবে সেটি এখন প্রশ্ন। কুড়ুলগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন ও ইংরেজি শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, সাজনী খাতুন বরাবরই ভালো ছাত্রী। বাবার আর্থিক দৈন্যতাই তার মেধা বিকাশে বাধা হতে পারে। সরকারি সহায়তা বা কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান তার পাশে দাঁড়ালে সে নিশ্চয়ই ডাক্তার হয়ে দেশসেবার সুযোগ পাবে।