কুষ্টিয়ায় চুক্তির বাইরে থাকলেন অধিকাংশ মিলমালিক : লক্ষ্য ১৭ হাজার মেট্রিক টন চুক্তি হলো ৭ হাজারের

 

স্টাফ রিপোর্টার: বোরো মরসুমে কুষ্টিয়ায় মাত্র ৭ হাজার ১৪ মেট্রিক টন চাল সরকারকে দিতে চুক্তি করেছেন মিলমালিকেরা। জেলায় এবার চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৭ হাজার ৪৬৪ মেট্রিক টন। জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তানভীর রহমান বলেন, চুক্তি করার সময়সীমা এক দফা বাড়ানো হয়। গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত চুক্তির শেষ সময় ছিলো। তারপরও চুক্তি করেননি মিলমালিকেরা। এখন মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলে সেটা বাস্তবায়ন করবেন তারা। আশা করা যাচ্ছে, যারা চুক্তি করেছেন, তারা আগামী সপ্তাহ গুদামে চাল সরবরাহ শুরু করবেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছর জেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৪৬৪ মেট্রিক টন। সরকারিভাবে চালের দাম ধরা হয়েছে কেজিপ্রতি ৩৪ টাকা। প্রথম দফায় ২০ মের মধ্যে মিলমালিকদের চুক্তি করার কথা ছিলো। সে সময় তারা কেউ চুক্তি করেননি। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয় পরে ৩১ মে পর্যন্ত চুক্তির সময় বাড়ায়। এরই মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের হস্তক্ষেপে অল্প কয়েকজন মিলমালিক লোকসান হলেও চুক্তি করেছেন। খাদ্য অফিসের তালিকাভুক্ত মিলমালিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কুষ্টিয়া সদরে (৩৭৫ জন)। গতকাল বিকেল পর্যন্ত সদরে মাত্র ৮৪ জন মালিক ৪ হাজার ৮৯৮ মেট্রিক টন চাল দিতে চুক্তি করেছেন। জেলায় সব মিলিয়ে চুক্তি হয়েছে ৭ হাজার ১৪ মেট্রিক টনের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন মিলমালিক বলেন, বর্তমান বাজারে মোটা চালের দাম ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। অর্থাৎ ৪ থেকে ৬ টাকা লোকসানে এ মরসুমে সরকারকে চাল দিতে হবে। বেশি লোকসানে কেউ চাল দিতে পারেন না। যারা চুক্তি করেছেন, তারা অনেকটা চাপে পড়েই করেছেন। দেশের অন্যতম বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগরে তিন শতাধিক মিল রয়েছে। এর মধ্যে অটোরাইস মিলের সংখ্যা ৩১। গত বছরও লাভ ছাড়াই বোরো মরসুমে চাল সরবরাহ করেন মিলাররা। কিন্তু এবার বাজার ও সরকার নির্ধারিত দামে ফারাক অনেক বেশি। এ অবস্থায় চাল দিতে নারাজ তারা।

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান বলেন, বড় মিলের কয়েকজন মালিক চুক্তি করেছেন। অধিকাংশ মিলারই চুক্তির বাইরে আছেন। কিছুই করার নেই। লোকসানে কেউ চাল দিতে রাজি নন। খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বরাদ্দ দেয়া মিলমালিকদের মধ্যে যারা চুক্তি করেননি, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে আগামী চার বছর তাদের চুক্তির বাইরে রাখা। এমনকি মিল বন্ধ করে সিলগালা করে দেয়াও হতে পারে।