কানের দুল রেখে বিষ ক্রয় : স্বামীর বন্ধুর বাড়িতে আত্মহত্যার অপচেষ্টা

দামুড়হুদায় বিয়ের দু মাস না পেরুতেই যৌতুকের টাকার জন্য নববধূকে নির্যাতন

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় বিয়ের দু মাস না পেরুতেই যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী-শাশুড়ি মিলে নববধূকে গালমন্দসহ মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শাপলা (১৮) নামের ওই নববধূ গালমন্দ সইতে না পেরে বিষপান করে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে বিষ উত্তোলন শেষে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। গৃহবধূ শাপলা উপজেলার কালিয়াবকরি গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী এবং বিষ্ণুপুর গ্রামের আবু জাফরের মেয়ে। গতকাল শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে কালিয়াবকরি গ্রামে স্বামীর জনৈক বন্ধুর বাড়িতে বিষপান করে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের পল্লি চিকিৎসক আবু জাফর স্ত্রী ও দু সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই জীবনযাপন করছিলেন। ২০০১ সালে আকস্মিক রোগে স্ত্রী মারা যায়। তছনছ হয়ে যায় সুখের সংসার। এর কিছু দিন পর আবু জাফর আবারও বিয়ে করেন। বিয়ের পর আবু জাফর স্ত্রী ও তার দু সন্তান ছেলে তারিক (২২) ও মেয়ে শাপলাকে (১৮) নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আলমডাঙ্গার গাংনী নিমতলা গ্রামে চলে যান। ওখানেই শুরু হয় তাদের নতুন জীবন। মাস ছয়েক আগে আবু জাফর তার শ্যালকদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় পুনরায় ফিরে আসেন নিজ গ্রাম বিষ্ণুপুরে। ছেলে তারিক ও মেয়ে শাপলা থেকে যায় মামাবাড়ি। মাস দুয়েক আগে শাপলাকে ভালোবেসে বিয়ে করে তারই ফুফাতো ভাই কালিয়াবকরি গ্রামের প্রবাসীর ছেলে আতিয়ার রহমান। কিন্তু ভালোবাসার এ বিয়ে মেনে নেয়নি ছেলের পরিবার। ফলে বিয়ের পরও শাপলাকে থেকে যেতে হয় মামার বাড়ি গাংনী নিমতলা গ্রামে। স্বামী আতিয়ার ওখানেই মাঝে মধ্যে যাতায়াত করতো। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে নববধূ শাপলা কালিয়াবকরি গ্রামে আসে এবং তার স্বামীর এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠে। ওই বাড়িতেই স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি হয় শাপলার। এরই এক পর্যায়ে দুপুর দেড়টার দিকে বিষপান করে শাপলা। স্বামী আতিয়ার ও তার জনৈক বন্ধু শাপলাকে মুমূর্ষু অবস্থায় দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। অবাক হলেও সত্য যে পাষণ্ড স্বামী তার স্ত্রীকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে রেখে সটকে পড়ে। কর্তব্যরত চিকিৎসক শাপলার বিষ উত্তোলন শেষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও খোঁজ মেলেনি পাষণ্ড স্বামী বা তার পরিবারের লোকজনের। রাত ৮টায় পিতা আবু জাফর ও শাপলার মামাবাড়ির লোকজন ছুটে যান চিৎলা হাসপাতালে। শাপলা বিষ পেলো কোথায় এ প্রশ্নের জবাবে তার পিতা বলেন, আমি শুনলাম ভালাইপুর মোড়ের এক কীটনাশকের দোকানে শাপলা তার কানের দুল জমা দিয়ে ওই বিষ কিনে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় পাষণ্ড স্বামীর শাস্তির দাবিতে মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য প্রার্থনা করেছেন শাপলার মামাবাড়ির লোকজন।