ইবোলা প্রতিরোধে সরকারের বিশেষ কর্মসূচি

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: পশ্চিমআফ্রিকার ইবোলা ভাইরাস প্রতিরোধে ৯০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ সতর্কতামূলক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সব আন্তর্জাতিকস্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে বিশেষ মেডিকেল দল কাজ করবে। গতকাল রোববার সচিবালয়েস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ-সংক্রান্ত এক সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রীমোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দেশেএর আগে সচিবালয়েস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এবোলা প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে একআন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমেরসভাপতিত্বে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহেদ মালেক ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীআসাদুজ্জামান খান কামালও এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় স্বাস্থ্যসচিবএম এম নিয়াজউদ্দিনের নেতৃত্বে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, ইমিগ্রেশনসহসংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে নিয়ে একটি অ্যাকশন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।৯০ দিনের সতর্কতামূলক কর্মসূচি অনুযায়ী দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, স্থল ও নৌবন্দরে চিকিৎসক টিম কাজ করবে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ওগবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জানান, যেসব দেশে ইবোলা ছড়িয়ে পড়েছে, সেসব দেশেই আক্রান্ত রোগীদের দেশত্যাগ করতেনা দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। তারপরও বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বাংলাদেশেবিমানবন্দর ও সব বন্দরে এই পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি জানান, আগামী তিন মাস এ ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারপর্যালোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।অধ্যাপক মাহমুদুরজানান, ইবোলা ভাইরাস বাংলাদেশে ছড়ানোর ঝুঁকি খুবই কম। তাছাড়া পশ্চিমআফ্রিকার ইবোলা সংক্রমণের দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সরাসরি বিমানযোগাযোগও নেই। তারপরও বিদেশ থেকে আসা কারো দেহে ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণশনাক্ত হলে তাকে আলাদা করে চিকিৎসা দেয়ার জন্য বিমানবন্দরের কাছেকুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একটি আলাদা ওয়ার্ড খোলা হবে।প্রাদুর্ভাবদেখা দিলে ভাইরাসটি মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে আইইডিসিআরপরিচালক দাবি করেন, আমাদের বিশ্বাস এই মুহূর্তে আমাদের সক্ষমতা আছে। আমরাপ্রতিবছরই নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করছি। ইবোলার মতো এই ভাইরাসেআক্রান্তেও মৃত্যুর হার অনেক। দ্রুততার সাথে যে কোনো নতুন ভাইরাস শনাক্তকরার মতো ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা আমাদের রয়েছে।

পশ্চিমআফ্রিকায় প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাস মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়ায় গত শুক্রবারআন্তর্জাতিক সতর্কতাজারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।লাইবেরিয়া, গিনি, সিয়েরা লিওন ও নাইজেরিয়াতে ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে এপর্যন্ত ৯৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাইবেরিয়া সরকার ইতোমধ্যে সে দেশে জরুরিঅবস্থা ঘোষণা করেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত রোগীদের ৯০ শতাংশই মারাযাচ্ছিলেন। তবে বর্তমানে তা কমে ৬০ শতাংশে নেমে এসেছে।

ডব্লিউএইচও বলছে, ইবোলা ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি। ইবোলা যেভাবে দ্রুতছড়িয়ে পড়ছে তা ‘অভাবনীয়’। এ ভাইরাস বিশ্বব্যাপি আরো ছড়িয়ে পড়লে তার পরিণতিহবে মারাত্মক।