আশানুরূপ ক্রেতা সমাগম ঘটলেও দাম কম হওয়ায় খামারিদের মাথায় হাত

ঈদকে সামনে রেখে ডুগডুগি পশুহাটে প্রচুর পরিমাণে গরু-ছাগলের আমদানি : সড়কে দর্ঘ যানজটের সৃষ্টি

 

বখতিয়ার হোসেন বকুল: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে ডুগডুগি পশুহাট। হাটে আশানুরূপ ক্রেতার সমাগম ঘটলেও প্রচুর পরিমাণে গরু-ছাগলের আমদানি আর অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম অনেকটাই কম হওয়ায় অধিকাংশ গরুই ফেরত নিয়ে যাচ্ছে খামারিরা। গো-খামারি ও গরু পালনকারীরা ডুগডুগি পশুহাটে গরু নিয়ে এসে ব্যাপারিদের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকলেও এ বছর গরুর দাম কম হওয়ায় গো-খামারিরা পড়েছেন লোকসানের মুখে।

বড়দুধপাতিলা গ্রামের এক খামারি জানান, তার অস্ট্রেলিয়ান জাতের গরুটির দাম কমপক্ষে এক লাখ ১০ হাজার টাকা হওয়া উচিত। অথচ আমি বিক্রি করলাম মাত্র ৭৫ হাজার টাকায়। লোকসান দিয়ে কেন বিক্রি করলেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সকাল থেকে ধরে রেখেছি দামই ওঠে না। ভাবলাম বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবো। কারণ গত বছর এ ধরনের একটি গরুর দাম ছিলো কমপক্ষে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জানান, তিনি হাটে গরু এনে বিপাকে পড়েছেন। ক্রেতারা তার গরুর দাম ৪৫ হাজার টাকা বলছেন। এ দামে গরু বিক্রি করলে লোকসান দিতে হবে। শেষমেষ একক্রেতা ৪৬ হাজার টাকা বলা মাত্রই আমি আর দেরি না করে দিয়ে দিলাম। স্থানীয় ক্রেতাদের ছোট সাইজের গরু কেনার প্রতি একটু ঝোক থাকলেও অস্ট্রেলিয়ান জাতের বড় গরুর চাহিদা খুবই কম। গতকাল সোমবার ডুগডুগি পশুহাট সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গরুর হাটে দূর-দূরান্ত থেকে খামারি ও গরুব্যবসায়ীরা ট্রাক, নসিমন, করিমন ও পাউয়ারট্রিলারে করে হাজার হাজার গরু নিয়ে আসছেন। কয়েক গরুব্যাপারীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, এ বছর ভারতীয় গরুর প্রচুর পরিমাণে চাপ থাকার কারণেই অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম একটু কম।

তারা আরো জানান, যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকায় ডুগডুগি পশুহাটটির গুরুত্ব দিনদিন বেড়েই চলেছে। পশুহাটটি দামুড়হুদা-দর্শনা সড়কের ওপর হওয়ায় প্রতিহাটেই ওই সড়কের জয়রামপুর কাঁঠালতলা থেকে লোকনাথপুর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ওই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনসহ পথচারীদের চরম ভোগান্তির সম্মুখিন হতে হয়। প্রতি হাটেই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটলেও অদ্যবধি হাটের জায়গা সম্প্রসারণসহ হাট উন্নয়নের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার ভুক্তভোগী জনসাধারণ। হাটের মধ্যে জায়গা না হওয়ায় সড়কের ওপরেই বসেছে পশুর হাট। ছোট, বড় ও মাঝারি সব ধরনের গরু আমদানি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, হাট ইজারাদারের প্রতিনিধিরা নিজেদের ইচ্ছামতো খাজনা আদায় করছেন। শুধুমাত্র ক্রেতার কাছ থেকে খাজনা নেয়ার নিয়ম থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই গরুপ্রতি (দুশ+দুশ) চারশ টাকা আদায় করা হচ্ছে। জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অচিরেই পশুহাটের জায়গা সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এলাকার ভুক্তভোগী মহলের এমনই প্রত্যাশা।