আল বিদা মাহে রমজান

 

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ২৩ রমজান। পবিত্র মাহে রমজানের নাজাতের দশকের আজ তৃতীয় দিন। ইসলামের হুকুম আহকাম ও ঈদের সাথে চাঁদের একটি বিশেষ সম্পর্ক আছে। পবিত্র কোরআনে চাঁদকে একটি ঝুলন্ত ক্যালেন্ডার এবং আল্লাহতায়ালার কুদরতের নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। চাঁদ দেখা মাত্রই একজন মুমিন ব্যক্তির মহান স্রষ্টার কথা স্মরণে আসে। রোজা রাখা ও ভাঙার ব্যাপারে হুজুর (সা.) এরশাদ করেছেন,তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাঙ (মেশকাত: মুসলিম)। ঈদের চাঁদ দেখার ব্যাপারে নবী করিম (সা.)এর নির্দেশ হলো,যদি মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না যায় তাহলে রোজা ৩০টি পূর্ণ কর (সহীহ মুসলিম)। ঠিক একই বিষয় আরও অনেক সহীহ হাদিসে বর্ণিত আছে। চাঁদ দেখার পর এরূপ মন্তব্য করাও হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে যে ২ দিনের চাঁদ, ৩ দিনের চাঁদ, ছোট চাঁদ, বড় চাঁদ ইত্যাদি.. ইত্যাদি (মুসলিম)। বলা হয়েছে যখন পশ্চিম দিগন্তে চাঁদ দেখা যাবে তখনই সেটা সেই নতুন মাসের চাঁদ হিসেবে ধরতে হবে। চাঁদ দেখার জন্য কোনো দূরবীক্ষণ যন্ত্র অথবা হেলিকপ্টারের সহায়তা নেয়াও সমীচীন নয়। কারণ এটি বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য যে,যদি বিমান বা কোনো নভোযানের সাহায্যে অনেক ওপরে উঠে যায় তাহলে দেখা যাবে যে সূর্য অথবা চাঁদ কখনই ডুবছে না। সুতরাং সেই ক্ষেত্রে রাত দিনেরও কোনো হদিস পাওয়া যাবে না। এজন্য চাঁদ খালি চোখেই দেখতে হবে। আর খালি চোখে দেখাচাঁদই পৃথিবীর মানুষের জন্য প্রযোজ্য। নিজ চোখে চাঁদ দেখার চেষ্টা করাও নবীজির একটি সুন্নত। এটি একটি অত্যন্ত সহজ হিসেব এবং সকলের জন্য এটাই সুবিধাজনক। এর ভেতরে কোনো জটিলতা নেই। একটি দেশের মধ্যে যদি কোনো এক জায়গায় চাঁদ দেখা যায় তাহলে তা সেই দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে হাদিসে বর্ণিত আছে যে, এক দেশের চাঁদ অন্য দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না (সহীহমুসলিম)। উদাহরণস্বরূপ,সৌদি আরব বা মধ্যপ্রাচ্যের চাঁদ আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না। ইসলাম অত্যন্ত সহজ একটি ধর্ম। চাঁদদিগন্তে থাকুক বা না থাকুক,যদি মেঘের কারণে বা অন্য কোনো কারণে চাঁদ দেখা না যায় তাহলে ৩০টি রোজা পূর্ণ করার কথা বলা হয়েছে। সুতরাং হিসেব অত্যন্ত সহজ ও পরিস্কার। আমরা অনেক সময় ঈদের নতুন চাঁদ দেখে সব কিছু ভূলে যাই। নতুন চাঁদ দেখে আল্লাহর রসুল(সা.) আমাদেরএ দোয়া পড়ার কথা বলেছেন,আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াছ ছালামাতি ওয়াল ইসলামি,রব্বী ওয়া রব্বুকাল্লাহ;হিলা-লু রুশদি ওয়া খইর। অর্থঃ হে আল্লাহ,এ চাঁদকে আমাদের ওপর উদিত কর নিরাপত্তা,ঈমান,শান্তি ও ইসলামের সাথে। হে চাঁদ তোমার ও আমার প্রভু একমাত্র আল্লাহ (তিরমিজি)।এছাড়া অন্যান্য দোয়ার কথাও হাদিসে বর্ণিত আছে।