আলমডাঙ্গায় কলেজছাত্র অপহরণের অভিযোগ

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার শান্তিনিকেতন ছাত্রাবাস থেকে কলেজপড়ুয়া ছাত্র রনি ওরফে মুন্নুকে অপহরণ করা হয়েছে। রনিকে জিম্মি করে অজ্ঞাত স্থান থেকে একই ছাত্রাবাসে অবস্থানকারী রাজশাহী এলাকার রিংকু মোবাইলফোনে অপহৃত রনির পিতার নিকট সোয়া লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে। গতকাল সোমবার সকালে রিংকু তাকে বাইরে থেকে ঘুরে আসার প্রস্তাব দিয়ে ডেকে নিয়ে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ি-পাইকপাড়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে রনি ওরফে মুন্নু (১৬) আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র। সে আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ায় অবস্থিত শান্তিনিকেতন ছাত্রাবাসে অবস্থান করে কলেজে লেখাপড়া করতো। একই ছাত্রাবাসে অবস্থান করে আসছিলো রাজশাহীর রাজপাড়া উপজেলার সিপাহীপাড়ার মৃত আবুল কালাম আজাদের ছেলে রিংকু নামের এক বখে যাওয়া নেশাসক্ত যুবক। সে শহরের আনন্দধামের একটি ক্লিনিকের প্যাথলজিতে (রক্ত পরীক্ষা) চাকরি করতো। গতকাল সোমবার সকালে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে রনিকে ছাত্রাবাস থেকে ডেকে নেয় রিংকু। সারাদিন পর বিকেলে রনির মোবাইলফোন থেকে রনির পিতা তোফাজ্জেলকে ফোন করে রিংকু জানায়- রনি এখন তাদের হাতে আটক। ছেলেকে ফিরে পেতে চাইলে দ্রুত সোয়া ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এমন সংবাদ পেয়ে তোফাজ্জেল ও তার আত্মীয়রা আলমডাঙ্গায় ছুটে আসেন। শান্তিনিকেতন ছাত্রবাসে ছেলে না পেয়ে অন্যান্য সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন রনি সকালে রিংকুর সাথে বেরিয়েছে আর ফিরে আসেনি। সে সময়ে অপহরণের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে একেবারে ভেঙে পড়েন রনির পিতাসহ আত্মীয় স্বজন। ওই মোবাইল নম্বরে রিং দিলে অপহরকচক্র তাৎক্ষণিকভাবে ৫ হাজার টাকা দিতে বলে। বাকী টাকা সকালে। তাদের দাবি মোতাবেক ৫ হাজার টাকা বিকাশ করে তোফাজ্জেল হোসেন। একটু পরে আবারও রনির মোবাইলফোন থেকে রিংকু তোফাজ্জেল হোসেনকে ফোন করে জানায়- তাদের ডেরা থেকে রনি পালিয়েছে। তবে রনিকে ধরার জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, তোফাজ্জেল হোসেন জানিয়েছেন, চাঁদার দাবিতে ইতঃপূর্বে তার বাড়িতে ২ বার বোমা হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তার ধারণা ওই চাঁদাবাজচক্র নেশাসক্ত রিংকুকে ব্যবহার করে এ অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ছাত্রাবাসটির তত্বাবধায়ক রাসেল নামের এক যুবককে আটক করে।
অন্যদিকে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল গভীর রাতে রনি অপরিচিত ব্যক্তির ফোন থেকে ফোন দিয়ে তার পিতাকে জানিয়েছে যে সে এখন নিরাপদে আছে। ৫ হাজার টাকা পেয়ে অপহণকারীরা তাকে নিয়ে হোটেলে খেতে ঢুকলে হাত-মুখ ধোয়ার অছিলায় রনি পালিয়ে একটা অটোতে উঠে কিছু দুরে গিয়ে এক বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বর্তমানে সে রাজশাহী শহরের এক ড্রাইভারের নিকট অবস্থান করছে।