আলমডাঙ্গায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে আত্মহত্যাপ্রবণতা

 

বছরের ৮ মাস অতিবাহিত হতে না হতেই উপজেলায় অপমৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪২ : প্রতি মাসে গড়ে ৬

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা উপজেলায় ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আত্মহত্যার ঘটনা। উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে পুরুষের আত্মহত্যার ঘটনা। এ বছরের এখনও ৮ মাস অতিবাহিত হয়নি। এরই মধ্যে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে ৪২টি। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ৬টি করে। ৪২ আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে মহিলার সংখ্যা ২২ আর পুরুষের সংখ্যা হয়েছে ১৯ জন। সর্বাধিক গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে ২৭, বিষপানে ৯, বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ৪, পানিতে ডুবে ১ ও অজ্ঞাত ১ জন। অভাব-অনটন, এনজিও ঋণের অক্টোপাশ, পারিবারিক অশান্তিসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অবক্ষয় আত্মহত্যার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছেন সচেতনমহল।

জানুয়ারি মাসে ৭ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে মহিলা ৪ ও পুরুষ ৩, গলায় ফাঁস লাগিয়ে ৪ , বিষপানে ২ ও অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার ১ জন। ফেব্রুয়ারি মাসে ৫ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে মহিলা ৪ ও পুরুষ ১, গলায় ফাঁস লাগিয়ে ৩ , বিষপানে ১ ও পানিতে ডুবে ১ জন। মার্চ মাসে ৬ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে মহিলা ৪ ও পুরুষ ২, গলায় ফাঁস লাগিয়ে ৫ ও বিষপানে ১ জন। এপ্রিল মাসে ৭ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে মহিলা ৪ ও পুরুষ ৩ জন। গলায় ফাঁস লাগিয়ে ৩, বিষপানে ৩ ও বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ১ জন। মে মাসে ৩ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের সকলেই মহিলা। গলায় ফাঁস লাগিয়ে ২ ও বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ১ জন। জুন মাসে ৩ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে মহিলা ২ ও পুরুষ ১ জন, সকলেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে। জুলাই মাসে ৪ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে মহিলা ১ ও পুরুষ ৩ জন। বিষপানে ২ ও বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ২ জন। আগস্ট মাস এখনও শেষ হয়নি। গতকাল রোববার পর্যন্ত ৮ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে মহিলা ১ ও পুরুষ ৭ জন। সকলেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক তাপস রশিদ বলেন, মানুষ যখন নিজেকে বিভিন্ন কারণে অর্থহীন মনে করে তখন সে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেয়। এলাকায় গত কয়েক বছরে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, অভাব-অনটন, এনজিও ঋণের অক্টোপাশ, পারিবারিক অশান্তিসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অবক্ষয় আত্মহত্যার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

সচেতনমহল আমাদের অঞ্চলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্তব্য করেন- ক্রমবর্ধমান খরচের সাথে সংগতিপূর্ণ উপার্জন না করতে পারা ও পারিবারিক অশান্তি পুরুষের আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। এছাড়া এনজিও ঋণের অক্টোপাসে জড়িয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে অনেক পরিবার। এ সব পরিবারে নারী-পুরুষ উভয়ের আত্মহত্যার আশঙ্কা রয়েছে। যৌতুক, পারিবারিক অশান্তি ও স্বামীর নির্যাতন বেশিরভাগ মহিলার আত্মহত্যার কারণ। এছাড়া প্রেম ও বিয়ের ব্যর্থতা থেকেও অনেক কিশোরী আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিচ্ছে। বয়স্কদের একটা অংশ অসুখে ভালো চিকিৎসার অভাবে আত্মহত্যা করেন।