আমরা প্রতিনিয়ত অবৈধযানে উঠে মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিচ্ছি

দামুড়হুদায় নিহতদের পরিবারের মাঝে গরু বিতরণকালে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩ পরিবারের মাঝে একটি করে গরু ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে দামুড়হুদা মডেল থানা চত্বরে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের উদ্যোগে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে নগদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা এবং ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা মূল্যের ১৩টি গরু (এড়ে বাছুর) বিতরণ করা হয়। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, নসিমন, করিমন, আলমসাধু, লাটাহাম্বার এগুলো ক্ষেতের ফসল বহনের জন্য। যাত্রীবহনের জন্য নয়। অথচ আমরা জেনে বুঝেই অবৈধযানে চলাচল করছি। সমাজের অনেক শিক্ষিত লোকজনও ওই অবৈধযানে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেকেই প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করছেন ওই সমস্ত অবৈধযানে। আমরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সমস্ত অবৈধযানে চলাচল করছি আর মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিচ্ছি। অবৈধযান বন্ধ করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধি। বড়বলদিয়ার ঘটনাটি একটু ভিন্ন। একসাথে একই গ্রামের অনেকজন হতাহত হয়েছে বলেই অনেকেই জানতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিদিন একটি দুইটি করে কতোজন যে মারা পড়ছে, কতোজন পঙ্গুত্ববরণ করছে তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। ওই সমস্ত পরিবারের অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা সকলকেই ওই সমস্ত অবৈধযানে চলাচল করতে নিরুৎসাহিত করবো। তিনি আরও বলেন, জেলা পুলিশ ও র‌্যাবের এক কর্মকর্তার মাধ্যমে ঢাকার এক হৃদয়বান ব্যবসায়ী হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি মূলত গরু কেনার জন্যই ৫ লক্ষাধিক টাকা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আমরা তার পক্ষ থেকে বিতরণ করছি। কিন্তু তিনি তার নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন। আপনারা তার জন্য একটু দোয়া করবেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউপি চেয়ারম্যান এসএএম জাকারিয়া আলম, পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বরকত আলী প্রমুখ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জিএম এমদাদুল হক ও এসআই আমজাদ হোসেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ দামুড়হুদার জয়রামপুর স্কুলবটতলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১৩ জন শ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরও ১২ শ্রমিক।