অবস্থান বা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে আলমডাঙ্গার একমাত্র ডাকবাংলোটি

ডাকবাংলোর নতুন ভবন নির্মাণে ২ বছর আগে দেয়া এলজিইডির খুলনা বিভাগীয় ডেপুটি ডিরেক্টরের প্রতিশ্রুতিও বাসি হয়েছে

 

রহমান মুকুল: অবস্থান বা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে আলমডাঙ্গার একমাত্র ডাকবাংলোটি। প্রায় ২ বছর আগে সরেজমিন পরিদর্শনকালে এলজিইডির বিভাগীয় ডেপুটি ডিরেক্টরের দেয়া খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন বিল্ডিঙের কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতিও ইতোমধ্যে বাসি হয়ে গেছে। দীর্ঘ বছর ধরে এ দুরাবস্থা বিরাজমান থাকায় দেশের পদস্থ কর্মকর্তাদের নিকট আলমডাঙ্গার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে সচেতনমহল মন্তব্য করেছেন।

আলমডাঙ্গায় বর্তমানে মাত্র একটি ডাকবাংলো রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, কোনো সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা রাজনীতিক আলমডাঙ্গায় অবস্থানকালে সাধারণত এ ডাকবাংলোতে উঠতেন এক সময়। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে এ ডাকবাংলোটির জরাজীর্ণ অবস্থা। মনে হয় স্মরণাতীত কাল ধরে সংস্কার করা হয়নি। ২টা রুমের প্রত্যেকটির সিলিং’র পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। রুমের প্রত্যেক ওয়ালের প্লাস্টারও খসে খসে পড়ছে। ল্যাট্রিন-ওয়াশরুমের অবস্থাও তথৈবচ। ভাঙ্গা ও প্রায় অবাসযোগ্য আসবাবপত্র যুগের পর যুগ ধরে এ ডাকবাংলোয় শোভাবর্ধন করে আছে। ফলে ইচ্ছা থাকলেও এখানে কোনো পদস্থ সরকারি কিংবা বেসরকারি কর্মকর্তারা সাধারণত অবস্থান করেন না। কয়েক দিনের জন্য আলমডাঙ্গা উপজেলায় দায়িত্ব পালন করতে আসেন যারা, দিন শেষে চুয়াডাঙ্গায় ফিরে যান শুধু রাতে অবস্থানের জন্য। রাত শেষে বাধ্য হয়ে আবার ফিরে আসেন। তারপরও যারা নিতান্তই বাধ্য হয়ে এ ডাকবাংলোয় অবস্থান করেন, তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আলমডাঙ্গাবাসীর জন্য মোটেও সুখশ্রাব্য কিংবা মর্যাদাকর নয়।

গত কয়েক মাস আগে আলমডাঙ্গা উপজেলার ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদরাসা সংশ্লিষ্ট মিনিস্ট্রি অডিট করতে আলমডাঙ্গায় আসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটর প্রফেসর শেখ বদরুল আলম। বাধ্য হয়েই তিনি আলমডাঙ্গা ডাকবাংলোতে উঠেছিলেন। তার সাথে আলাপের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আলমডাঙ্গা শহর তো ছোট-খাট জেলা শহরের মতো। কিন্তু ডাকবাংলোর এমন দুরাবস্থা কেন? এখানে কি ভদ্রলোক অবস্থান করতে পারে? তিনি আরও বলেন, তিনি দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় অডিট করেছেন। তার মধ্যে আলমডাঙ্গার ডাকবাংলোতে অবস্থানের অভিজ্ঞতা সর্বাধিক তিক্ততর।

ইউএনডিপি’র ফিস ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার মনিটরিং অফিসার মামুনুর রশিদ খান তুষার বলেন, ডাকবাংলোতে অবস্থানের সময় সাধারণত অবকাশ যাপনের প্রশান্তিও প্রত্যাশা করা হয়। অথচ আলমডাঙ্গার ডাকবাংলোতে সে ধরনের মান প্রত্যাশা করা দিবা স্বপ্নের মত। নিদেনপক্ষে ভদ্রলোকের অবস্থান উপযোগী করা খুবই প্রয়োজন।

আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জী বলেন, ২০১৪ সালে লোকাল গভর্ণমেন্ট’র খুলনা বিভাগীয় ডেপুটি ডিরেক্টর নিশ্চিন্ত পোদ্দার চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীকে সাথে নিয়ে আলমডাঙ্গা ডাকবাংলো পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্তমান ডাকবাংলো ভবন সংস্কারের সাথে সাথে সামনের অংশে নতুন আরেকটি আধুনিক ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্তের কথা জানান। কিন্তু পরে আর বাস্তবায়ন হয়নি। এমনকি গত ২ বছরেও নয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী সামাদুল ইসলাম বলেন, আলমডাঙ্গার ডাকবাংলোর ডিজাইন ও এস্টিমেট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।