অবতরণ : ভালোবাসায় সিক্ত হলেন টরিক-দিলিপ

বিলম্বে কৌতূহলী প্রশ্ন- হেলিকপ্টার কি হারিয়ে গেলো? শব্দে দৃষ্টি ঘুরলো উপরে

 

ইসলাম রকিব/আলম আশরাফ: হেলিকপ্টার কি হারিয়ে গেলো? ঠিক পথ হারিয়েছে। তা না হলে অতো দেরি হচ্ছে কেন? চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠ ঘিরে উৎসুক জনতার ঘড়ির কাঁটা যখন দুপুর ১২টা ৩০ পার, তখন কৌতূহলীদের অনেকেরই ছিলো প্রশ্নযুক্ত মন্তব্য। না, হারায়নি। পথ ভুলে অন্যদিকেও যায়নি। ১২টা ৪০মিনিটে আকাশ থেকে যখন ভেসে এলো শব্দ, তখন সকলেরই দৃষ্টি উপরে। ফুটে উঠলো অন্যরকম পরিবেশ।

SAM_4435

হেলিকপ্টার টাউন ফুটবল মাঠে অবতরণ করে কমপক্ষে ১০ মিনিট লাগলো পাখা ঘোরা থামতে। পাখা থামলো, তিন আরোহী হাজি সাহেদুজ্জামান টরিক, দিলিপ কুমার আগরওলা ও শরিফুজ্জামান শরিফ নামলেন। পাইলট মেজর (অব.) শফিকুল আলমও মাটি ছুলেন। উৎসুক জনতাকে থামানো দায়। সকলেই ছুটে গেলেন হেলিকপ্টারের কাছে। কেউ হাত বোলালেন, কেউ সামনের স্বচ্ছ কাঁচ গলিয়ে ভেতরটা দেখার চেষ্টা করতে লাগলেন। উপস্থিত পুলিশ দল সকলকে ঠেলে সরাতে লাগলো, আর আপন ঠিকানায় ফেরা সাহেদুজ্জামান টরিক, দিলিপ কুমারকে ফুল দিয়ে বরণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তাদের বন্ধুমহলসহ চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার স্বয়ং মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের খোদ সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক। বুকে বুক মেলালেন, কুশল বিনিময়ের পর সাহেদুজ্জামান টরিকসহ আগতরা গেলেন তাদের গন্তব্যে।

সাহেদুজ্জামান টরিককে নিয়ে কেন অতো কৌতূহল? তিনি সিঙ্গাপুর প্রবাসী। শুধু সফল ব্যবসায়ীই নন, সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচিত সভাপতি। প্রতি বছরেই আসেন, কোনো কেনো বছরে একাধিকবারও আসা হয় তার। এবারের আসাটা অনেকটাই আলাদা। কেননা, বেসরকারি হেলিকপ্টারযোগে যেকেনো ব্যক্তির ব্যক্তিগতভাবে ফেরা এটাই প্রথম।  হেলিকপ্টারযোগে টরিকসহ অন্যদের অবতরণ দেখে কৌতূহলী অনেকেই এ প্রসঙ্গে বললেন, ঠিকই, হেলিকপ্টার নামলো, এরপর আরো অনেক কিছুই নামবে। কিন্তু প্রথম হেলিকপ্টারে অবতরণে তো টরিকরা ইতিহাস করে রাখলেন! দিলিপ কুমার আগরওয়ালা ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আর সাহেদুজ্জামান সাহেদ গ্রুপের এমডি। দুজনই চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান।

সাহেদুজ্জামান টরিক কয়েকদিন চুয়াডাঙ্গায় থাকবেন। দিলিপ কুমার অবশ্য গতকালই বিকেল সোয়া ৪টার দিকে একই হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফিরেছেন। এদেরকে যারা ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলো- চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান মিজাইল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান, সাবু মিয়া, ঠিকাদার ওয়ায়েচ কুরুনী টিটো, খাদিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান। আর নাইটিঙ্গেলের ক্ষুদে ক্রিকেটাররা সকাল থেকেই ফুল নিয়ে অপেক্ষায় ছিলো টাউন ফুটবল মাঠে। হেলিকপ্টার অবতরণের পর আরোহীরা নামতেই নাইটিঙ্গেলের ক্ষুদে সদস্যরা এগিয়ে গিয়ে ফুল দিয়ে বরণ করেন দুজনকে। এক ক্ষুদে কৌতূহলবশে প্রশ্ন করেই ফেললো, ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছুতে কতোটুকু সময় লাগলো? খুবই অল্প সময়। ৩৫/৩৬ মিনিটের মতো। তা হলে অতো দেরি করলে কেন? তোমরা জানো না, আমরা সেই কখন থেকে তোমাদের জন্য দাঁড়িয়ে আছি! অতিথি ক্ষুদের মুখে হাত দিয়ে আদর করলেন। বললেন, আগে বুঝিনি তোমরা আমাদের জন্য এতো আয়োজন করবা। আগে জানলে সত্যিই বলছি এক মিনিটও দেরি করতাম না। দারিদ্র্য পুনর্বাসন সংস্থার পক্ষেও টরিককে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়। ফুল দেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মানিকুজ্জমানসহ সংস্থার সদস্যরা।

সাহেদুজ্জামান টরিককে আজ শনিবার সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তরফে সংবর্ধনা জানানো হবে। চেম্বার কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সকলকে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।