সড়কের ধারের গাছ এবং ভেঙে পড়ে প্রাণহানি

 

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে মানবজাতির অস্তিত্ব বিলীন হতে বাধ্য। বৃক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ অবদানই শুধু রাখছে না, আমাদের অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। কাঠ দেয়, দেয় ছায়া। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বনায়ন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। রাস্তার পাশে গাছ লাগানো এ কর্মসূচির অন্যতম অংশ। কিন্তু এই গাছই কখনো কখনো মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। এজন্য গাছের কী দোষ দেয়া যায়? অবশ্যই না। ভেঙে পড়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ গাছ শনাক্ত করে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারলে প্রাণহানি হওয়ার কথা নয়।

মেহেরপুরের মুজিবননগর-দর্শনা সড়কের ধারের গাছের শুকনো ডাল ভেঙে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা এটাই যে প্রথম তা নয়। এর আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের শহীদ আবুল কাশেম সড়কের ধারের একটি গাছের বড় ডাল ভেঙে পড়ে এক রিকশাচালকের চোখ কেড়ে নিয়েছে। সেই রিকশাচালক কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে কয়েক বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এরকম অনেকেই আছেন যারা গাছের শুকনো ডালের আঘাতে অঙ্গ হারিয়েছেন। জীবনটাই হয়ে উঠেছে তার কাছে বোঝা। কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা নয়। সড়ক ও জনপথই হোক, আর জেলা পরিষদ বা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল শাখার আওতাভুক্ত সড়কের ধারের গাছই হোক, সড়কের ধারের কোন গাছটি কখন ঝুঁকিপূর্ণ তা দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকবল থাকতে হবে। গাছ চুরি যেমন ঠেকাতে হবে, তেমনই গাছ ভেঙে পড়ে মানুষের অঙ্গ বা প্রাণ কেড়ে নেয়াও বন্ধ করতে হবে।

সড়কের ধারের বড় ও বুড়ো গাছগুলো শনাক্ত করে বিধি সম্মতভাবেই বিক্রি করতে হবে। গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে প্রাণহানি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। চলাচলের জন্যই সড়ক, সেই সড়কের ধারের গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যেমন অবদান রাখে, তেমনই ছায়া দেয়। কাঠ দেয়। গাছ চুরি যেমন মেনে নেয়া যায় না, তেমনই গাছের ডাল শুকিয়ে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল কর্তাদের উদাসীনতা কাম্য নয়। ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি গাছ কারো প্রাণ কাড়লে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।