শহরের পরিবেশ দূষণ রোধে দরকার নানামুখি পদক্ষেপ

 

শহর পরিষ্কার রাখতে হলে শহরবাসীকে যেমন দায়িত্বশীল হতে হয়, তেমনই সিটি করপোরেশন বা পৌরসভাকেও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হয়। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার উন্নতি হলেও পৌরএলাকা পরিষ্কার রাখার মতো বাস্তবমুখি পদক্ষেপের অভাব অস্বীকার করা যায় না। তা না হলে মাথাভাঙ্গা ব্রিজের শহরপ্রান্তে অতো আবর্জনার স্তুপ কেন? বড়বাজার নিচের বাজারে প্রবেশমুখে নাকে কাপড় দিতেই বা হয় কেন?

 

ময়লা আবজর্না তথা বর্জ্য ফেলার জন্য নির্ধারিত স্থান দরকার। প্রয়োজনীয় স্থানগুলোতে গণশৌচাগার প্রয়োজন। আছে, আবার নেই। একের পর এক ড্রেন নির্মাণ করা হলেও ড্রেনের অধিকাংশ স্থানই মশা উৎপাদনের স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়মতো পরিষ্কারের অভাব পদে পদে পরিলক্ষিত হয়। জনবহুল রাস্তার পাশে ময়লা ফেলার ডাস্টবিন না থাকার কারণে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে রাখা হয়। এতে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বাড়ছে।

 

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বর্তমান পরিষদ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক বিভক্তিকরণ পাঁচিল নির্মাণ করেছে। শোভাবর্ধনের পাশাপাশি শহরে দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে। ফুটপাথও নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ ফুটপথগুলো ব্যবহারের মতো মুক্ত রাখা যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও দোকানিরা তা বেদখল করে রাখছে, কিছু অংশে ময়লা আবর্জনার স্তুপের কারণে পথচারীদের পা সেদিকে পড়ছে না। বাজারে পশু জবাই না করার বিধি নিষেধ থাকলেও সকল কসাই পিলখানায় গিয়ে নিয়ম মেনে পশু জবাইসহ বর্জ্য নিদিষ্ট স্থানে ফেলছে না। বিষয়গুলো এক সময় তেমন ধর্তব্য বলে মনে না হলেও বর্তমানে বিধি-বিধান মানতে বাধ্য করার মতো পদক্ষেপের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে।

 

দীর্ঘদিনেও চুয়াডাঙ্গায় ট্রাক টার্মিনাল গড়ে তোলা যায়নি। অবশ্য তার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ট্রাক টার্মিনালটি দ্রুত নির্মাণ করে রাস্তার পাশে রাখা ট্রাকগুলো অপসারণ করতে হবে। রাস্তার পাশে ট্রাক রেখে ধোয়া মোছার কারণে পথচারীদের যেমন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে, তেমনই রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় বাসটার্মিনাল আছে। বাইপাস সড়ক নেই। শহরের ভেতর দিয়ে বাসগুলো চলাচল করে। ফলে যানজটসহ নানা সমস্যা ফুটে উঠছে। ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাস্ট্যান্ড নেই। যাত্রী পাওয়ার আশায় যেখানে সেখানে অটো থামিয়ে রাখার কারণে পথচারীদের বিড়ম্বনার যেন শেষ থাকছে না। দুর্ঘটনারও শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের।

 

চুয়া মল্লিকের নাম অনুসারে নাকি চুয়া অর্থাৎ উঁচু পরিষ্কার ডাঙ্গা হিসেবে চুয়াডাঙ্গার নাম হয়েছে। সে বির্তকের চেয়ে চুয়াডাঙ্গাকে বাসযোগ্য রাখার বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনীয় স্থানগুলোতে গণশৌচাগার নির্মাণ যেমন জরুরি, তেমনই শহরের ময়লা আবর্জনা ভাগাড়ে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। রাস্তার পাশে ডাস্টবিন নির্মাণ এবং তাতে ময়লা ফেলতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পৌর নাগরিকদেরও নিজের শহরকে ভালো রাখতে পরিবেশ দূষণরোধে আন্তরিক হতে হবে।