লজ্জা দেয়ার চেয়ে সুধরে সুপথে ফেরানোটাই শ্রেয়

 

অবশ্যই অপ্রাপ্ত বয়সীদের ভুল নিয়ে মাতামাতির চেয়ে ওদের সুধরে সুপথে নেয়ার চেষ্টা করা উচিত। যদিও সেলফোন আর আকাশ সংস্কৃতির ধকলে বেসামাল ওরা। তা না হলে প্রাইমারির গণ্ডি পেরোতে না পেরোতে নিজেদের নায়ক নায়েকা ভেবে বিয়ের দাবি নিয়ে বেহায়াপনা কেন?

দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সের আগে কোনো মেয়ে বিয়ের পিঁড়েই বসতে পারে না। সন্তানকে অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ের আসনে বসালে বর-কনের অভিভাবকের শাস্তি অনিবার্য হয়ে ওঠে। বাল্যবিয়ের আয়োজন করার দায়ে কয়েক বছর ধরে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বহু বর-কনের পিতা-মাতা বা তাদের নিকটজনসহ কাজিকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়েছে। বাল্যবিয়ে রোধে আইন প্রয়োগে প্রশাসনের আশু পদক্ষেপ সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এরপরও যে বাল্যবিয়ে হচ্ছে না তা নয়। শূন্যের কোঠায় নিতে হলে যেমন দরকার সামাজিক আন্দোলন, তেমনই অপ্রাপ্ত বয়সে কিশোর-কিশোরীদের বিপথগামিতা রুখতে দরকার সচেতনতা। সেটা সৃষ্টিতে ঘরে-বাইরে বিদ্যালয়ে কর্তব্যরতদের মাঝে যে আন্তরিকতায় ঘাটতি বিদ্যমান তা অস্বীকার করার জো নেই। ছেলে বা মেয়ে শিশু বেড়ে ওঠার সাথে সাথে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনই আসে না, সহজাত প্রবৃত্তিও পেয়ে বসে ওদের। ঠিক কতোটা বয়সে বিয়ের উপযোগী হয়? তা নিয়ে বিতর্ক আছে, আছে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের যুক্তি। সব কিছুর হিসেব মিলিয়ে মেয়েদের ১৮ বছরের আগে বিয়ে উচিত নয় বলেই বিধিগত বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। এসব না বুঝে বহু কিশোর-কিশোরী যেমন ভুল করে তেমনই অনেক অভিভাবকও নানা কারণে সন্তানকে বাল্যবিয়ের আসনে বসাতে তোড়জোড় শুরু করেন। যা কাম্য নয়।

অপ্রাপ্ত বয়সী কেউ বিয়ের দাবি নিয়ে কথিত প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে বসলেই বিয়ের তোড়জোড় করার যেমন সুযোগ নেই, তেমনই শিশুর এ ধরনের ভুলকে উসকে দেয়ারও কোনো কারণ নেই। এক শিশু যতোবারই ভুল করুক না কেন, তাকে লজ্জা দেয়ার চেয়ে সুধরে সুপথে ফেরানোটাই শ্রেয়।