রাজপথে ব্যস্ত পুলিশ চোর ঠেকাবে কখন?

চুয়াডাঙ্গার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাঠের সেচযন্ত্র শ্যালোইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ চুরির হিড়িকে কিছুটা লাগাম পড়লেও ঝিনাইদহ মহেশপুর এলাকায় বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্রের মোটর চোরের উৎপাত বেড়েছে। সেচযন্ত্র ও এর যন্ত্রাংশ চুরি মানেই সেচকাজ ব্যাহত। কৃষকের ক্ষতি। কৃষকের ক্ষতি মানে দেশের ক্ষতি। কৃষি উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। তা হবে কীভাবে?

 

দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান। কী হচ্ছে, কী হতে যাচ্ছে? এসব প্রশ্নের জবাব সাধারণ মানুষের অজানা। চরম অনিশ্চয়তা। রাজপথ উত্তপ্ত। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের সদস্যরাই শুধু নয়, আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সশস্ত্রবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। এ অবস্থায় মাঠের কৃষি নিরাপত্তা দেখার দায়িত্ব পালন করবেন কে?

 

রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিচ্ছে ডাকাত, ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজচক্রও। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজ চক্রের অপতৎপরতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাঝে মাঝেই চাঁদাবাজচক্র আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য বোমা নিক্ষেপ করছে। এক সময় এলাকা সন্ত্রাস কবলিত হিসেবে চিহ্নিত ছিলো। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, খুনের পর খুন করে আতঙ্ক সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যই ছিলো চাঁদাবাজি। অবস্থাদৃষ্টে শঙ্কামাখা প্রশ্ন- আবারও কি জিম্মি হতে যাচ্ছি?

 

কৃষিপ্রধান দেশ। দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। কৃষকরাই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলায়। আহার জোগায়। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করে। রাজনৈতিক অস্থিরতায় শুধু মাঠের কৃষি উপকরণ চুরিই বৃদ্ধি পাচ্ছে না, কৃষকরা তাদের চাহিদামতো সার না পেয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। সন্ত্রাস যেমন বাড়ছে, তেমনই কৃষি উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। এর মূলে রয়েছে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতা। ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনই সর্বপ্রথম কাম্য।

 

রাজনৈতিক অস্থিরতা কতোটা দীর্ঘ হবে? কবে মাঠের দিকে নজর দিতে পারবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা? তা অনিশ্চিত। ফলে নিজ দায়িত্বে নিজ নিজ এলাকার নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজরদারি জরুরি। রাজপথ অস্থির, পুলিশে অপ্রতুলতা। এরপরও কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে চোরের উপদ্রব রুখতে পুলিশের বিশেষ নজর প্রয়োজন। কারণ কৃষকরাই তো দেশের প্রাণ।