মুস্তাফিজের সাফল্য আমাদের গর্ব

 

বর্তমান ক্রিকেটবিশ্বে সুপরিচিত একটি নাম বাংলাদেশের টাইগার পেসার মুস্তাফিজ। বিশ্বের অনেক নামিদামি ক্রিকেটারকে পেছনে ফেলে মুস্তাফিজ নামটি এখন অনেক বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত ইন্ডিয়ার প্রিমিয়ার লীগে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলে নিজের জাত যেনো আরো ভালোভাবে চিনিয়ে দিয়ে এলো মুস্তাফিজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশের হয়ে ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত মুস্তাফিজুর আইপিএলেও দ্যুতি ছড়িয়ে এবারের আসরের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন। সর্বোচ্চ ৮৩.২ শতাংশ ভোটে মুস্তাফিজ পেছনে ফেলেন অন্য সব প্রতিযোগীদের। মুস্তাফিজের এই অর্জন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের, সম্মানের। বাংলাদেশের আরো একজন খেলোয়াড় আইপিএলে অংশ নিয়েছেন। বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডারের তালিকার স্থান পাওয়া সাকিব আল হাসান। এই আসরে তিনি একেবারে নিষ্প্রভ না হলেও খুব বেশি দ্যুতিও ছড়াতে পারেননি। তবে দেশি-বিদেশি অঙ্গনে ক্রিকেটের নানা টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সাকিবও দেশের জন্য কম সম্মান বয়ে আনেননি। আমরা বাংলাদেশ জাতীয় দলের সব খেলোয়াড়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ তারা প্রত্যেকে আমাদের জন্য অনেক সম্মান বয়ে এনেছেন।

এক সময় ফুটবল ছিলো বাংলাদেশের প্রধান খেলা। আবাহনী-মোহামেডানের খেলা মানেই তুমুল উত্তেজনা। তুমুল হৈ চৈ। নব্বই দশকে আকরাম খানের নেতৃত্বে আইসিসি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপ আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ফুটবলের সেই স্বর্ণকাল পেছনে ফেলে ক্রিকেট দখল করে নেয় সর্বস্তরের মানুষের মন। বাংলাদেশের ক্রিকেট আজকের যে অবস্থানে রয়েছে এখানে পৌঁছানো খুব সহজ ছিলো না। অনেক বাধা-বিপত্তি-ব্যর্থতার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল আজ বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। একটি খেলা এবং খেলার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের সাফল্য দেশের ভাবমূর্তি কতোটা উজ্জ্বল করে তুলতে পারে এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ ক্রিকেটের বর্তমান উজ্জ্বল অবস্থান। এ কথা নির্দ্বিধায় বলা চলে যে, ক্রিকেটের অসামান্য উত্থান বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে। ক্রিকেটাঙ্গণে মুস্তাফিজের প্রবেশ বেশিদিনের নয় অথচ ক্রিকেটবিশ্ব এখন এক নামে তাকে চেনে। যতোবার মুস্তাফিজের নাম উচ্চারিত হয় ঠিক ততোবারই বাংলাদেশের নামও উঠে আসে। কারণ মুস্তাফিজ বাংলাদেশের খেলোয়াড় এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফিজকে ‘জাতীয় বীর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এতো অল্প সময়ে, অল্প বয়সে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে নিজেকে নিয়ে যাওয়া কম সৌভাগ্যের কথা নয়। এতে ভাগ্য বিধাতার সহায়তা যেমন রয়েছে তেমনি মুস্তাফিজের যোগ্যতা, দক্ষতার অবদানও রয়েছে। সেই সাথে যারা মুস্তাফিজকে সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের অবদানও কম নয়। তাদের সঠিক মূল্যায়নের কারণেই আজকের মুস্তাফিজের সৃষ্টি। আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে এ রকম অনেক মুস্তাফিজ রয়েছে যারা একটু সহযোগিতা পেলে জ্বলে উঠতে পারে আপন মহিমায়। এদের খুঁজে বের করে যথাযথ তদারকির মাধ্যমে তৈরি করে নিতে হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু ক্রিকেট খেলাই নয়, অন্য যে সব খেলা রয়েছে সেগুলোর প্রতিও বিশেষ নজর দেয়া জরুরি।