তারপরও প্রশ্নটা থেকেই যায়, সত্যিই কি মা তার দু সন্তানকে হত্যা করেছেন? না। মাতৃত্ব মায়া-মমতায় ঘেরা মা কখনই কোনো সন্তানকে হত্যা করতে পারেন না। কেনো মাতৃত্ব, মায়া মমতা উবে গিয়ে হত্যা, সেটাই বিবেচ্য। বিচার্য হওয়া উচিত। তা না হলে আমরা যে আর আমাদের মানুষ বলে দাবি করতে পারিনা।
অবশ্যই মা তার সন্তানকে আগলে রাখেন, মায়ের কাছে সন্তান যতোটা নিরাপদ, অতোটা নিরাপদ আঁচল আর নেই। এরপরও যখন শুনতে হয়, কোনো কোনো মা আছে যার কাছে সন্তান নিরাপদ নয়, তখন ওই উক্তি আওড়ানো ব্যক্তির ‘মা’ শব্দটার প্রতি দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়। কেননা, ‘মা’ তো খুন করেননি, ‘মা’ পারিবারিক অশান্তির কারণে ‘মা’ থাকতে পারেননি। কেন তিনি ‘মা’ থাকতে পারেননি সেটাও সামনে এনে দায়ীদের উচিত শিক্ষা দিতে না পারলে পঁচনশীল সমাজের সুস্থতা আশা করা অবান্তর নয় কি? বহু পরিবার রয়েছে, পারিবারিকভাবে বাড়ির নতুন মা পুরোনো মায়ের কাছে তথা শাশুড়ির নিপিড়িত। স্বামীর নির্যাতন তো আছে। ননদের নির্যাতনও বহু বধূকে সহ্য করতে হয় দাঁতে দাঁত চেপে। একজন নারীর যখন আর দাঁড়ানোর কোনো জায়গা থাকে না তখন অসুস্থতা পেয়ে বসা অমূলক নয়। সুযোগ বুঝে অর্থ হাতায় মতলববাজ নারী-পুরুষ দরবেশ। ওরাই স্বপ্ন বা দিব্যদৃষ্টির দোহায় দিয়ে সন্দেহের বীজ বপণ করে সুবিধা হাতানোর পথটা মসৃণ করে। অবশ্য পূর্বের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বহু নারী-পুরুষকে যে ভয়ঙ্কর হতে হয়নি তাও নয়। ফলে সর্বনাশ হওয়ার আগে সতর্ক হওয়াই ভালো। কেননা, চলার পথে ঘরে বাইরে সবখানেই তো আচমকা বাঁক।
মাতা-পিতার মতো দরদি ভবে আর হবে না। কোনো মা বা বাবা সন্তানের সামনে ভয়ঙ্কর রূপধারণ করলে বুঝতে হবে, ব্যতিক্রমের মধ্যে গুরুতর কারণ লুকিয়ে রয়েছে। কারণগুলো শনাক্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যেমন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া দরকার, তেমনই সন্তানই হোক আর যেই হোক হত্যা করলে শাস্তি পেতে হয় তাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।