মানুষকে পিটিয়ে যারা উল্লাস করে তাদের কি মানুষ বলা যায়?

প্রকৃত মানসিক প্রতিবন্ধী হোক আর সুস্থই হোক, কাউকে মারার এখতিয়ার দেশের প্রচলিত আইন কাউকে দেয়নি। এরপরও কেন মারপিট? কেন নৃশংস উল্লাস? সভ্যতার এতোদিন পরও সমাজে কেন এসব সামাজিক অসভ্যতা? ঘটনার আড়ালে কি শুধুই অসচেতনতা? আস্থাহীনতাও কি দায়ী নয়?
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলুকদিয়ার টেইপুরে রাতের অন্ধকারে সন্দেহভাজন একজন দেখে কেউ বললেন- গরু চোর, কারো সন্দেহ গুপ্তচর। নানাজনের নানা মন্তব্যের মাঝে কেউ কেউ শুরু করলেন পিটুনি। পিটুনির শিকার হয়ে যখন অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন তখন দূরে ফেলে রেখে হাত ধুয়ে সাধু সাজলেন মারধর করা ব্যক্তিরা। ভোরে পথচারীরা যখন দেখেন তখন তাদের ধারণা লোকটা মানসিক প্রতিবন্ধী। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সন্দেহভাজন ধরে গণপিটুনির ঘটনা এটাই প্রথম নয়। বেশ কিছুদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। গণপিটুনি কোনো সভ্য সমাজের চিত্র নয়। সন্দেহভাজন কেউ কোনো এলাকায় অবস্থান নিলে তার সম্পর্কে দ্রুত পুলিশে খবর দেয়াই যুক্তিসঙ্গত। পিটুনি আইনত দ-নীয় অপরাধ। বিষয়টি জেনে না জেনে যারা হুচুকে মেতে পেশিশক্তি প্রয়োগের উল্লাসে মেতে ওঠেন তাদের যুক্তি যতোটাই শক্ত হোক না কেন, আইনের প্রতি আমাদের সকলের শ্রদ্ধা থাকতে হবে। আইন প্রয়োগ সংস্থাসমূহের ওপর রাখতে হবে আস্থা।
মানুষকে কারা মারপিট করে? মানুষ হলে কি মানুষকে মারা যায়? একজন মানুষ যখন পেশিশক্তি প্রয়োগে মেতে ওঠে, হয়ে ওঠে হিংস্র তখন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না বললেই চলে। ওদের সামলাতে সমাজের সচেতন মানুষগুলোকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হয়। আইন প্রয়োগকারীদেরও হতে হয় আস্থার প্রতীক।