ব্যক্তি পর্যায়েও সচেতনতা জরুরি

সংখ্যায় কম হলেও বাংলাদেশে কভিড-১৯ বা নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। বৃহস্পতিবার আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, ইতালিফেরত এক ব্যক্তির পরিবারের তিন সদস্যের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। বুধবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কভিড-১৯ সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয় সারা দেশে এখন হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছয় হাজার ৩৯৩ জন রয়েছে। এদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ছয় হাজার ৩১৫ জন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ৭৮ জন। দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে কোয়ারেন্টিনে রাখার প্রয়োজনে হাসপাতালের পাশাপাশি টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানও প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। খুব দ্রুতই দেশের আট বিভাগেই নতুন করোনা ইউনিট স্থাপন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
অন্যদিকে করোনাভাইরাসে দেশে প্রথম মৃত্যুর খবরে দেশজুড়ে নতুন করে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সারা দেশে ভীতি ছড়ালেও বিদেশফেরত অনেকেই ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনের ছকে বাঁধা থাকতে চাইছে না বলে খবরে প্রকাশ। প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানা করেও তাদের ইচ্ছামতো চলাফেরা ঠেকানো যাচ্ছে না। কোয়ারেন্টিনে থাকা সরকারি নির্দেশনা না মানায় ১৪ জেলায় বিদেশফেরত ১৯ জনকে জরিমানা করেছে প্রশাসন। আরেকটি ভয়ের খবর হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা জারির পরও ইউরোপ থেকে যাত্রী আসা থেমে নেই। খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে নানা কৌশলে যাত্রী আসছেই।
দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রতিদিনই নানা ধরনের পদক্ষেপের কথা বলে আসছে শুরু থেকেই। ওদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই নতুন শঙ্কা হিসেবে দেখা দিতে যাচ্ছে ডেঙ্গু। ‘করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর শঙ্কা’ শীর্ষক খবরে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যেই ঘুরে ফিরে দেশের মানুষের মাঝে এভাবেই আশঙ্কা জেগে উঠে ডেঙ্গু প্রকোপের। গেলো বছরের ভয় এবং এবার মশার বেপরোয়া উপদ্রব থেকেই এমন আশঙ্কা জেগেছে মানুষের মধ্যে। যদিও এ বছরের শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১৫৫ জন। উৎস ধ্বংস না হলে গত বছরের মতো পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে আমাদের সর্বাত্মক সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। সরকারিভাবে সব ধরনের প্রস্তুতির পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাও এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। রাজধানীর একাধিক হাসপাতাল শুধু করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ভর্তি ও চিকিৎসার জন্য আলাদা করার বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *