বিদেশি প্রতারক চক্রকে প্রতিরোধ করা জরুরি

 

ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে নানা অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে বিদেশিরা। ভিসা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও দেশ ছেড়ে যাচ্ছে না তারা। আত্মগোপন করে থেকে মাদক চোরাচালান থেকে শুরু করে প্রতারণা করছে। ক্ষেত্রবিশেষে বাংলাদেশে বিয়ে করেও থেকে যাচ্ছে অনেকে। বিয়ে বা প্রেমসম্পর্ক গড়ে তুলে নারীদের অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ত করছে। সম্প্রতি কোকেন চক্রের সাথে জড়িত একাধিক নারীকে গ্রেফতারের পর বিষয়টি জানা গেছে। এমন আরো অনেক চক্র দেশের মধ্যে সক্রিয় বলে পুলিশের ধারণা। একটি নাইজেরিয়ান চক্রের ৭ সদস্যকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এমনই ৭ নাইজেরিয়ান চক্রের সাথে কাজ করতো দুই বাংলাদেশি নারী ও এক তরুণ। মোবাইলফোনে মেসেজ, ই-মেইল বা ফেসবুকে বার্তা পাঠিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিলো তাদের কাজ। কখনো মোটা অঙ্কের পুরস্কার পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, কখনো বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলতো এ চক্র।

এমন ২২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টও শনাক্ত করা হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টের একটি থেকেই প্রায় দেড় কোটি টাকা নাইজেরিয়ায় পাচার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আবার বিদেশ থেকে কোকেনের চালান আসছে বাংলাদেশে। গত এপ্রিলে এমন একটি কোকেনের চালান বাংলাদেশে আসে, যা বাংলাদেশের এক নারীর গ্রহণ করার কথা ছিলো। এ নারী বিয়ে করেছে তুরস্কের এক নাগরিককে। কোকেনের চালান ধরা পড়ার পর প্রথমে বাসা বদল এবং পরে তুরস্কে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো তার। এর আগেও হেরোইন চোরাচালানের ঘটনায় এই নারী আটক হয়েছিলো।

বিদেশি প্রতারক ও চোরাচালানি চক্রকে প্রতিরোধ করা জরুরি। বিদেশি নাগরিক যারা দেশে আসছে, তাদের পাসপোর্ট ও ভিসার তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে থাকে। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। শুধু নাইজেরিয়ান নয়, অন্য অনেক দেশের নাগরিকরাও বাংলাদেশে থেকে জালটাকা, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের কারবার করছে। চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে অপরাধপ্রবণতা অনেকাংশে কমবে আসবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্তরিক হলে এসব অপরাধীকে রুখে দেয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।