প্রসঙ্গ: আদালতের হাজতখানা থেকে আসামির পলায়ন

 

কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বে কতোটা উদাসীনতা না হলে অতো মোটা রড কেটে পালানো সম্ভব? চুয়াডাঙ্গার আদালত হাজতখানা থেকে একজন আসামির পলায়নের পর সঙ্গত কারণেই এ প্রশ্ন জাগে। আদালতে হাজির করানোর জন্য আদালত প্রাঙ্গণের হাজতখানায় রাতে কোনো আসামি রাখা হয় না। সকালে আনা হয়। বিকেলেই জেলহাজতে ফেরত নেয়া হয়। রাতে যেহেতু আসামি রাখা হয় না, সেহেতু দিবালোকেই হাজতখানার ভেন্টিলেটারের রড কাটা হয়েছে। কেউ দেখলো না?

চুয়াডাঙ্গার কোর্টকাস্টডি তথা হাজতখানা থেকে গত মঙ্গলবার যে আসামি পালিয়েছে, সে বড় ধরনের দাগী নয়। একটি চুরি ও হত্যার চেষ্টা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। পুলিশের বরাত দিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামি ৯ মাস ধরে জেলহাজতে। যেদিন আসামি পালিয়েছে সেদিন পুলিশ বেমালুম তা গোপন রেখেছে। পরদিন জানাজানি হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। একই সাথে হাজতখানা থেকে পালানো আসামিকে ধরতে পুলিশ নানামুখি তৎপরতাও অব্যাহত রেখেছে। হাজত ভেঙে পালানো আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশের দক্ষতা জানান দেয়া জরুরি।

চুয়াডাঙ্গা সন্ত্রাস কবলিত জনপদ। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, চুয়াডাঙ্গা জেলহাজতে বেশ কয়েকজন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী বন্দি রয়েছে। তাদেরকেও মাঝে মাঝে তথা তাদের মামলার ধার্যদিনে আদালতে হাজির করানো হয়। হাজির করাতে হলে ওই কোর্টকাস্টডিতেই রাখতে হয়। ভাগ্যিস আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়ার মতো দাগী আসামি পালায়নি। এরপরও আসামি পলায়নের বিষয়টিকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখা উচিত নয়। চুরি মামলার একজন পালানোর মধ্যদিয়ে আদালতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বহীনতারই বহির্প্রকাশ ঘটেছে। এ ঘটনা যে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনেরই সংকেত, তা বলাই বাহুল্য।

আসামির পালানোর আড়ালে অবশ্যই রয়েছে কর্তব্যে অবহেলা। বিভাগীয় তদন্তপূর্বক প্রকৃত দায়ী পুলিশ সদস্যদের উপযুক্ত শাস্তি অনিবার্য। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ নিশ্চয় সে বিষয়টি গুরুত্বের সাথেই বিবেচনা করছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালানো অপরাধ। একটি চুরি ও হত্যা অপচেষ্টা মামলার আসামি হাজত থেকে পালিয়ে যে অপরাধ করেছে তা বিধি অনুযায়ী পূর্বের অপরাধের চেয়ে অনেক বেশি শাস্তিযোগ্য। তাকে পালাতে যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরও শনাক্ত করা প্রয়োজন।